২২ মার্চ ২০২৩, বুধবার

অভিষেকে কেমন দেখলেন তাওহিদ হৃদয়কে?

- Advertisement -

অ্যান্ডি ম্যাকব্রায়ানের আর্ম বলে পরাস্ত হয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত যখন প্যাভিলিয়নের পথে, ঠিক তখন ব্যাট হাতে তাওহিদ হৃদয়ের মাঠে প্রবেশ। ক্রিকেট দুনিয়া যখন সাকিব-মুশফিকের দারুণ এক জুটি দেখার অপেক্ষায়, তখন হৃদয়কে আসতে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। কিন্তু হৃদয়ও যে দারুণ একটা ইনিংস খেলতেই এসেছেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন নিজের মোকাবেলা করা দ্বিতীয় বলেই।

ম্যাকব্রায়ানকে লং লেগ দিয়ে ফ্লিকে চার মেরে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারে রানের খাতা খুলেছেন হৃদয়। প্রথম বল থেকেই তাকে যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে, ধারাভাষ্যকাররাও সেটাই বলছিলেন। এর পেছনে একটা কারণ কি সাকিব আল হাসান?

সাকিবের সাথে অভিষেকেই গড়েছেন শত রানের জুটি

দুই বছর আগের বিপিএলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের দলে ছিলেন হৃদয়। ধারাবাহিকভাবে খারাপ খেলতে খেলতে এক পর্যায়ে নিজেই অনুরোধ করেছিলেন সাকিবকে, যাতে তাকে একাদশের বাইরে রাখা হয়। সাকিব আল হাসান তা করেননি, বরং বলেছিলেন, “তুমি তোমার মতো করে খেলে যাও। চিন্তা করো না।” সেই মৌসুমে না পারলেও, বিপিএলের সবশেষ আসরে হৃদয় ঠিকই চেনাতে পেরেছেন নিজেকে। আর তাতেই জায়গা মেলেছে জাতীয় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে।

যেই সাকিবকে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পেয়েছেন পাশে, সেই সাকিবের অধীনেই অভিষেক হয়েছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও। মজার ব্যাপার হলো, ওয়ানডে অভিষেকেও ব্যাট করতে এসে হৃদয় পেলেন সাকিবকেই।

মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে পেয়েছেন অভিষেক ক্যাপ

তাওহিদ হৃদয় যখন মাঠে ঢুকছেন, সাকিব তখন পানি পান করছিলেন। হৃদয়কে দেখতেই ডেকে কিছু পরামর্শ দিলেন। হয়তো বলেছেন, “ভয় না পেয়ে নিজের সহজাত খেলাটাই খেলে যাও, আত্মবিশ্বাস হারিও না।”

হৃদয়ও খেলেছেন আত্মবিশ্বাসের সাথেই। যেভাবে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলেছেন শুরু থেকেই, দেখে কেউ বলবে না এই ছেলের এটাই প্রথম ম্যাচ। আর যারা হৃদয়কে চেনেন, তারা জানেন তরুণ এই ব্যাটার এভাবেই খেলতে পছন্দ করেন। লিস্ট-এ তে নামের পাশে প্রায় পঞ্চাশ গড় আর স্ট্রাইক রেট আশির ওপরে তো এমনি এমনি হয়নি।

ওয়ানডে অভিষেকেই ফিফটি করা বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়

সাকিব আল হাসানের সাথে গড়েছেন ১৩৫ রানের জুটি, সাকিব আউট যাওয়ার পর দলকে এগিয়ে নেয়ার কাজটা করেছেন মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে। ওহ! বলাই হয়নি, মাঝে নিজের অর্ধশতকও পূরণ করেছেন, সেইসাথে ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ রানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন সবার ওপরে। পেছনে ফেলেছেন নাসির হোসেনের ৬৩ এবং ফরহাদ রেজার ৫০ রানের ইনিংসকে।

শটের ওপর শুরু থেকেই খুব ভালো কন্ট্রোল ছিল তরুণ ডানহাতি এই ব্যাটারের। প্রিয় শট পুল শট, সেটা খেলার সুযোগ হাতছাড়া করেননি। এমনকি বেশিরভাগ বাউন্ডারিও আদায় করে নিয়েছেন ফেভারিট শট খেলেই। ইনিংসের যখন ৪০তম ওভার শেষ, তখন তাওহিদ হৃদয়ের নামের পাশে ৬৯ বলে অপরাজিত ৬৬*; ৬ চার, ১ ছয়! পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্যতম সেরা ইনিংস।

হৃদয়ের যখন ৬৫ রান

শেষ দশ ওভারে হৃদয় খেলতে পেরেছেন মোটে ১৬ বল, সেটাও ৪৬তম ওভার পর্যন্ত; এই ১৬ বলে তার ব্যাট থেকে টাইগারদের স্কোরবোর্ডে যুক্ত হয়েছে ২৬ রান। সাকিব আল হাসানের মতোই নার্ভাস নাইনটিজে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন, নামের পাশে ৯২!

আট রানের আক্ষেপ থাকতে পারে, তবে তাওহিদ হৃদয় ম্যাচের শুরু থেকে যেভাবে খেলেছেন সেটা তাকে ভক্তদের মনে আলাদা জায়গা করে দিতে বাধ্য। অভিষেকেই এমন ইনিংস বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার কখনোই খেলতে পারেননি। তরুণ এই ব্যাটার ছন্দটা কতদূর অব্দি ধরে রাখতে পারেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img