পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ১২৭ রান। শুক্রবার টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অস্ট্রেলিয়া দলে তিনটি পরিবর্তন থাকলেও, অপরিবর্তিত দল নিয়েই মাঠে নামে টাইগাররা। অজিদের হয়ে অভিষিকেই হ্যাটট্রিক করেছেন নাথান এলিস।
ইনিংসের শুরুতেই অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড বল তুলে দেন অফ স্পিনার অ্যাস্টন টার্নারের হাতে। প্রথম ওভারের শেষ দুই বলেই তৈরী করেছিলেন সৌম্যকে ড্রেসিং রুমে ফেরাবার সুযোগ। কিন্তু, দুইবারই বেঁচে যান সৌম্য। দ্বিতীয় ওভারের বোলিংয়ে এসেই নাঈমকে দুর্দান্ত অফ সুইংয়ে ওয়েডের ক্যাচে পরিণত করেন জস হ্যাজলউড। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে এসেই হারানো ছন্দ খুঁজে চলা সৌম্যকে প্যাভিলিয়নে ফিরান অ্যাডাম জাম্পা। জাম্পার বলে সুইপ করতে গিয়ে এলবিউব্লিউ হয়ে সৌম্য যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছেন, তখন তার নামের পাশে ১১ বল খেলে মাত্র ২ রান। বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ ওভার ১ বল খেলে ২ উইকেট হারিয়ে ৩ রান। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে মাত্র ২৮ রান। সর্বশেষ ১৫ টি-টোয়েন্টিতে যা বাংলাদেশের সর্বনিম্ন পাওয়ারপ্লে রান।
নবম ওভারে জাম্পার প্রথম বলেই বোলারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে আগারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। শুক্রবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ বছর পূর্ণ করা সাকিব প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ১৭ বলে ২৬ রান করে। পরের ওভারের তৃতীয় বলে অ্যাগারের করা বলটাকে ডাউন দ্যা উইকেটে তিন মিটার এগিয়ে যেভাবে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকালেন আফিফ হোসেন, তাতে মনেই হলো না একটু আগেই সাকিবের উইকেটটা হারিয়েছে বাংলাদেশ। দশ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেট হারিয়ে ৬০ রান।
দুর্দান্ত ছন্দে থাকা আফিফ ড্যান ক্রিস্টিয়ানের করা শেষ বলটাকে শর্ট একস্ট্রা কাভারে ঠেলে দিয়ে দ্রুতই সিঙ্গেল নিতে গিয়ে পরলেন বিপদে। অ্যালেক্স ক্যারির আন্ডার আর্ম করে থ্রো করা বলটা বোলিং প্রান্তের স্ট্যাম্পে গিয়ে ডিরেক্ট হিট করে আফিফ পৌছানোর পূর্বেই। ১৩ বলে ১৯ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথে আফিফ। ব্যাটিংয়ে শামিম হোসেন; ১২ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭৬/৪। ২৯ বলে ২৩ রানে অপরাজিত টাইগার ক্যাপ্টেন রিয়াদ।
১৫তম ওভারে জাম্পা যখন নিজের শেষ ওভারটি করতে এলো, তার আগের ওভারেই ৮ বলে ৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা শামিম হোসেন। কিন্তু এতোকিছু তোয়াক্কা করার আর সময় কোথায় নুরুলের! অপ্রতিরোধ্য জাম্পাকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে যেনো সেই ইঙ্গিতই দিলেন সোহান। কিন্তু, পরের ওভারেই রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে হয়েছে তাকেও। রিয়াদের কাভারে বাড়িয়ে দ্রুতগতিতে নিতে চাওয়া সিঙ্গেলটাতেই হলো বিপত্তি। মইজেস হেনরিকসের থ্রোটা ডিরেক্ট গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। ৫ বলে ১১ রান করে ড্রেসিং রুমের পথে সোহান। ১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯৮/৬।
দুর্দান্ত ছন্দে থাকা আফিফ ও সোহান ফিরে যাওয়ার পর মিরপুরের স্লো এই পিচে থিতু হতে পারেনি আর কেউই। রিয়াদ শেষে চেষ্টা করলেও বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছে মাত্র ১২৭ রান। শেষ পাঁচ ওভারে বাউন্ডারি এসেছে মাত্র ৩ টি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫২ রান এসেছে রিয়াদের ব্যাট থেকে। ৫২ রান করতে রিয়াদ খেলেছেন ৫৩টি বল।
ইনিংস শেষ হবার ২ বল আগে অভিষিক্ত এলিসের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রিয়াদ। এরপর টানা দুই বলে মুস্তাফিজুর রহমান এবং মাহেদি হাসানকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেন এলিস। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন জাম্পা এবং হ্যাজলউড। জয়ের জন্য অজিদের প্রয়োজন ১২৮ রান।