একজন ছিলেন ব্যাট হাতে বিশুদ্ধতার প্রতীক, একজন ব্যাট-বল যাই যখন হাতে পেতেন, তা নিয়েই সব গুঁড়িয়ে দেওয়া আগ্রাসনের প্রতীক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে দুজনেই দিয়েছেন অনেককিছু, এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তাঁদের কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
আইসিসির সর্বোচ্চ সম্মানসূচক ‘হল অব ফেইম’ এ নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক ব্যাটসম্যান মাহেলা জয়াবর্ধনে ও সাউথ আফ্রিকার বোলিং অলরাউন্ডার শন পোলক। তাঁদের সাথে আরো অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তী নারী ক্রিকেটার জ্যানেট ব্রিটিন।
Janette Brittin, Mahela Jayawardena and Shaun Pollock enter the ICC Hall of Fame!
More on the trio’s induction 👉 https://t.co/ZqWvbLJCjn pic.twitter.com/U5YpPOJvCt https://t.co/Jz0PukWBjo
— Cricket Breaking News (@CricketBreakin3) November 13, 2021
শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে আধুনিক গ্রেটদের তালিকায় প্রথম তিনজনের মধ্যেই থাকবে মাহেলা জয়াবর্ধনের নাম। শ্রীলঙ্কার হয়ে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে খেলেছেন মোট ৬৫২টি ম্যাচ। ভারতের শচীন টেন্ডুলকার (৪৬৩) ছাড়া বিশ্বেই এরচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি আর কোন ক্রিকেটার। এবং তিন ফরম্যাটেই ব্যাট হাতে ছুটিয়েছেন রানের ফল্গুধারা। টেস্টে ৪৯.৮৪ গড়ে ১১,৮১৪ রান (সর্বকালের ৯ম সর্বোচ্চ) করেছেন জয়াবর্ধনে, ওয়ানডেতে ১২,৬৫০ রান, টি-টোয়েন্টিতে ১৪৯৩ রান।
এবং শুধু রান করার খাতিরেই রান করেননি, ‘যেভাবে’ করেছেন সেটিও আলাদা একটি গল্প। কোন উঁচুদরের শিল্পীর মতো যেন নিখুঁত তুলির আঁচড়ে বাইশ গজের ফুটিয়ে তুলতেন সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৭৪ বা ভারতের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপের ১০৩ এর মতো মহাকাব্যিক সব ইনিংস। ধুমধাড়াক্কা টি-টোয়েন্টির যুগে জয়াবর্ধনেই দেখিয়েছিলেন ক্রিকেটীয় ব্যাকরণের বাধ্য ছাত্র হয়েও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রানের পর রান করা যায়। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছেন, ২০১৫ বিশ্বকাপের পর নিয়েছেন অবসর। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং পরামর্শক।
এদিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭৩৮৬ রান ও ৮২৯ উইকেট নেওয়া শন পোলককে বলা যায় বিশ্বের গুটিকয়েক ‘জেনুইন’ অলরাউন্ডারদের একজন। যদিও ব্যাটিংয়ের চেয়ে তার বোলিং নিয়ে আলোচনা বেশি হয়। সাউথ আফ্রিকার ইতিহাসে গতি-সুইং আগ্রাসন মিলিয়ে তাঁর চেয়ে ভয়ঙ্কর ফাস্ট বোলার হাতেগোনা। যাদের বলা যায় সেই অ্যালান ডোনাল্ড ছিলেন দীর্ঘদিন তার নতুন বলের সঙ্গী, আরেকজন ডেল স্টেইনের আদর্শই ছিলেন পোলক। ১০৮ টেস্টে ৪২১ উইকেট নিয়েছেন, ৩০৩ ওয়ানডেতে ৩৯৩ উইকেট।
ব্যাট হাতেও মিডল অর্ডারে কার্যকরিতা ও আগ্রাসনের প্রতিমূর্তি ছিলেন পোলক। টেস্টে ২টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ১৬টি ফিফটি। ওয়ানডেতে ১টি সেঞ্চুরি ও ১৪টি ফিফটি।
অন্যদিকে নারী পুরুষ মিলিয়ে আইসিসি হল অব ফেইমের ৩১তম সদস্য হলেন জ্যানেট ব্রিটিন। ইংলিশ আশি-নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ড নারী দলের হয়ে ২৭টি টেস্ট ও ৬৩টি ওয়ানডে খেলা ব্রিটিন অবশ্য এখন বেচেঁ নেই। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৭ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন; মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৫৮ বছর। মৃত্যুর ৫ বছর পর এই প্রমীলা ক্রিকেটার পেলেন আইসিসির সর্বোচ্চ সম্মান। নারীদের টেস্টে জ্যানেট ব্রিটিনের সর্বোচ্চ ১৯৩৫ রানের রেকর্ড আজও অক্ষত, অক্ষত তাঁর ৫টি সেঞ্চুরির রেকর্ডও। ১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ শিরোপাজয়ী দলের সদস্যও ছিলেন ব্রিটিন, ছিলেন ঐ আসরের সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহক।