ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের গল্প যখনই লেখা হবে, ফাওয়াদ আলমের নাম নিশ্চিতভাবেই আসবে। ২০০৯ সালে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক, এরপর আবার যখন দলে ফিরলেন ততদিনে পেরিয়ে গেছে ১১টি বছর। এই ১১ বছরে জীবনের অসংখ্য রঙ দেখে ফেলেছেন বলেই হয়তো এখন আর আবেগটা তাকে ছুঁয়ে যায় না সেভাবে। ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সমালোচক-ভক্তদের নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে ফাওয়াদ বলেছেন, তিনি শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে চান এবং সরল পথে চলতে চান।
“আমার কাজ ক্রিকেট খেলা। আমি যদি আমাকে নিয়ে কে কি বললো কিংবা করলো এসব উপভোগ করতে শুরু করি, তাহলে আমার ক্রিকেট সেখানেই থেমে যাবে। আমি শুধু আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ, আর কারোর প্রতি নই”-বলছিলেন ফাওয়াদ
তিনি আরো বলেন, “সত্যি বলতে কোনো কিছুর উপর আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী ঘটে। আমি কেবল একটি সরল পথ অনুসরণ করে চলার চেষ্টা করি। প্রত্যেকের ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন আছে। আপনি যদি সঠিক পথে চলেন, তাহলে ভালো কিছু ঘটবে। মানুষ যদি আমার প্রশংসা করে তাহলে এটা আমার জন্য সম্মানজনক”
গত দশ বা এগারো বছর যেমনি হোক না কেনো, পাকিস্তানের টেস্ট স্পেশালিস্ট এই ব্যাটসম্যান তাতেও সন্তুষ্ট। কারণ এই সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় সব ধরণের অর্জনের মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি। ২০০৯ এ দল থেকে বাদ পড়ার পর ৫৬.৪৮ গড়ে শুধু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেই ছিল ২৬টি সেঞ্চুরি ও ৩৩টি ফিফটি। তারপরেও তাকে ডাকা হয়নি দলে। কিন্তু এতে আক্ষেপ নেই ফাওয়াদের।
“একজন মুসলিম হওয়ার কারণে সবধরণের পরিস্থিতিতেই আপনার আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। আপনি যদি গত ১০ বা ১১ বছরের ঘরোয়া ক্রিকেটের কথা বলেন, আমার ধারণা আমি বিশ্বের সেরা বিশজনের একজন। আল্লাহ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে আমার অনেক সেঞ্চুরি আছে এবং আমার গড়টাও বেশ সম্মানজনক। ঘরোয়া ক্রিকেটে আমার অনেক রেকর্ড আছে; বেশিরভাগ পরিসংখ্যানে আমি হানিফ মোহাম্মদের পরে দ্বিতীয় স্থানে আছি। তাহলে, আমি কিভাবে বলতে পারি যে, আমার জীবনের শেষ ১০ থেকে ১১ বছর নষ্ট হয়েছে? এই সময়ে আল্লাহ আমাকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছেন এবং এর জন্য আমার কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত”- ফাওয়াদ যোগ করেন
নিজের ক্যারিয়ারটা যেমনি হোক না কেনো, তাতে ভীষণ সন্তুষ্ট পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান। প্রত্যাবর্তনের পর ২২ ইনিংসে সেঞ্চুরী হাঁকিয়েছেন চারটি, আগের একটি সহ সর্বমোট ৫টি; যা এশিয়ার কোন খেলোয়াড়ের পক্ষে দ্রুততম।
“এমনও তো হতে পারতো, আমি আগেই জাতীয় দলে সুযোগ পেতাম কিন্তু এখনকার মতো কোনো অর্জনই আমার থাকতো না। আল্লাহ যা করেন, তা মঙ্গলের জন্যই করেন। আমরা সবসময়ই প্রার্থনা করি যেন আমাদের সাথে সবকিছু ভালো হয়। আমি মনে করি, আমার জীবনে যা যা হয়েছে তার সবকিছুই আমার জন্য ভালো ছিল” – নিজের ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন নিয়ে বলছিলেন ফাওয়াদ