দ্বিতীয়ার্ধের তখন মিনিট দশেকও হয়নি। ম্যাচে দুর্দান্ত খেলতে থাকা ইতালি ততক্ষণে বার পাঁচেক নিয়ে ফেলেছে তুরস্ক রক্ষণের পরীক্ষা। বারবার তুরস্কের জমাট রক্ষণে খেই হারিয়ে ফেলা ইতালি অবশেষে পেলো জালের দেখা। তবে সেখানে কৃতিত্বটা তুরস্ক ডিফেন্ডার মেরিহ দেমিরাল। কৃতিত্ব না বলে দোষ বললেও হয়তো ভুল হবে না। ইতালিয়ান উইঙ্গার দমেনিকো বেরার্দির ক্রস দেমিরালের বুকে লেগে জড়ায় জালে। ইউরো ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটল এমন ঘটনা, ইউরোর কোনো আসরের প্রথম গোল আসল আত্মঘাতী হিসেবে।
ইতালি-তুরস্কের লড়াই দিয়ে পর্দা উঠেছে ইউরো-২০২০ এর । গ্রূপ- ‘এ’ এর দুদলের লড়াইয়ে জিতেছে ইতালি । ইতালির জয় ৩-০গোলে। ইনসিনিয়া-ইমোবিলের পাশাপাশি আরেকটা দেমিরালের আত্মঘাতী গোল। ইউরো ইতিহাসে এই প্রথম তিন গোল দিলো ইতালি।
Italy have scored three goals in a EUROs match for the first time ?
This attack is going to cause problems ??#EURO2020 #ITA pic.twitter.com/2W9sMN1lu5
— Goal (@goal) June 11, 2021
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত একটায় ইতালির রোমের স্তাদিও অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে ইউরোপের শ্রেষ্টত্বের লড়াইয়ে মাঠে নামে দুইদল। ইতালির আস্থা ছিল ৪-৩-৩ ফর্মেশনে, আর তুরস্কে খেলেছে ৪-১-৪-১ ফর্মেশনে। বাছাইপর্বে কোনো ম্যাচ না হেরেই মূলপর্বে খেলতে নেমেছে ইতালি, রবার্তো মানচিনির দলের জন্য এর থেকে বড় টোটকা আর হতে পারে না। বাছাইপর্বে মাত্র ৩ গোল হজম করা তুরস্কের আস্থা ছিল রক্ষনে। আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর দুই দলের লড়াইটা তাই হয়েছে জমজমাট।
শুরু থেকেই তুরস্কের জমাট রক্ষনের পরীক্ষা নিতে থাকে ইতালি। ম্যাচের ১৭তম মিনিটে ইতালির সামনে সত্যিকারের সুযোগ আসে। বক্সের মধ্যে ওয়ান টু ওয়ান খেলে গোলকিপারের বাঁ পাশে কোনাকুনি শট নিলেন ইনসিনিয়া, গোলমুখে রাখতে না পারায় এ যাত্রায় জলের দেখা পায়নি ইতালি। মিনিট পাঁচেক পর ইতালির সামনে আবার সুযোগ, ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক জর্জো কিয়েলিনির হেড তুর্কি গোলকিপার উরজান চাকির প্রতিহত করেন ।
প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই খেলা চলেছে তুরস্কের অর্ধে। তবে ইতালি গোলমুখ খুলতে পারেনি,তুরস্কের জমাট রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি ইতালিয়ান ফ্রন্টলাইন। উল্টো কাউন্টার অ্যাটাকে কয়েকবার গোল খাওয়ার উপক্রম হয়েছিল ইতালিয়ানদের। পুরো প্রথমার্ধ দুর্দান্ত খেলেছেন ইতালিয়ান উইঙ্গার দমেনিকো বেরার্দি। প্রথমার্ধ শেষের বাঁশি বাজার মিনিট দুই আগে ইতালিয়ান সেন্টার ফরোয়ার্ড চিরো ইমোবিলের সামনে সুযোগ এসেছিল গোল করার। তার দুর্বল শটের দিশা ছিল সোজা গোলকিপার। তাই গোল মিসের আক্ষেপ নিয়েই বিরতিতে যায় ইতালি।
বিরতি থেকে ফিরে ইতালি আরো উদ্যমী। তবে কাউন্টার অ্যাটাকে ৫১তম মিনিটে গোল পেতে পারতো তুরস্ক।।মিনিটখানেক পর বেরার্দির ক্রস থেকে আত্মঘাতী গোল করে বসেন মেরিহ দেমিরাল। ইতালির উইঙ্গারের ক্রস বুক দিয়ে ক্লিয়ার করতে গিয়ে জালে জড়িয়ে বসেন এই ডিফেন্ডার, সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস। পরের মিনিটে ইতালির সামনে আবারো গোলের সুযোগ। স্পঞ্জিলার শট প্রতিহত করেন চাকির। মিনিট দশেক পর গোল করেন ইমোবিল। স্পঞ্জিলার শট ঠেকালেও তালুবন্দি করতে পারেননি চাকির, ফিরতি বলে শট করে জালে জড়ান ইমোবিল। ল্যাৎসিও স্ট্রাইকারের গোল ইতালিকে এগিয়ে দেয় ২-০ ব্যবধানে।
Italy start #EURO2020 with a massive win! ?#TUR #ITA pic.twitter.com/46daDbKBqt
— Goal (@goal) June 11, 2021
ম্যাচ শেষ হতে তখন মিনিট দশেক বাকি। তুরস্কের কফিনে শেষ পেরেকটুকু ঠুকে দেন ইনসিনিয়া। ইমোবিলের অ্যাসিস্টে গোল করে ইতালিকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন ইনসিনিয়া। মিনিটখানেক পরে দুজনকেই তুলে নেন ইতালি বস মানচিনি। বাকিটা সময় বড়কোন ঘটনা ঘটেনি। তাই তিন গোলের বড় জয় দিয়েই এবারের ইউরোর যাত্রা শুরু করলো ইতালি।