বৃষ্টির বাধা স্বত্ত্বেও তৃতীয় দিন শেষে পাল্লেকেলে টেস্টে এগিয়ে শ্রীলংকা। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে যেমন, তৃতীয় সেশনেও স্বাগতিকদের এগিয়ে রেখেছে ডিকওয়েলা-মেন্ডিস পার্টনারশিপ। ১৯.৩ ওভারে ৮৭ রান যোগ করেছে লংকানদের ৭ম উইকেট জুটি। বৃষ্টি এবং আলো কমে যাওয়ায় অন্ততো ৪৫ মনিট আগে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনের খেলা।
পাল্লেকেলেতে দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে শ্রীলংকার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য দুটোই ছিলো পরিষ্কার, দ্রুত রান তোলা। ছয়টা চারে সাজানো নিরোশান ডিকওয়েলার ৪৮ বলের হাফ সেঞ্চুরিতে লক্ষ্যের দিকে বেশ ভালো গতিতেই এগিয়েছে লংকানরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ডিকওয়েলার তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি, ক্যারিয়ারের ১৮তম। মাঝে বৃষ্টির কারণে আধঘন্টার মতো খেলা বন্ধ থাকলেও বন্ধ থাকেনি শ্রীলংকার দ্রুত রান তোলার গতি।
এরইমধ্যে আবারও ক্যাচ মিসের ঘটনা। তাসকিনের বলে দ্বিতীয় স্লিপে, একশো বাহান্নতম ওভারের শেষ বলে রমেশ মেন্ডিসের ক্যাচ ফেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এমনই এক ক্যাচ, যেটা আসলে সহজের চাইতেও সহজ। বেশি সহজ বলেই হয়তো হাত ফস্কেছে!! এই শান্তই প্রথম দিন দিমুথ করুনারত্নের ক্যাচ ফেলেছিলেন, স্লিপে দাঁড়িয়েই। ২৮ রানে জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন করুনারত্নে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে শান্তদের এই অতি সাধারণ ক্যাচ মিসগুলোর শেষ কোথায়? কিংবা এই ধরণের হাস্যকর মিসের ব্যাখ্যা কি? অথবা এই মিসগুলো দলকে কতোটা ভুগিয়েছে? প্রশ্নগুলো এক করে, আগামীতে হয়তো কেউ একটা বইও লিখে ফেলতে পারবেন!! রুটিন ক্যাচগুলো মিসের মহড়া স্রেফ অবিশ্বাস্য!!
শান্ত একা কেন, দ্বিতীয় সেশনে পয়েন্টে দাঁড়িয়ে পাথুম নিশাঙ্কার সহজ ক্যাচ মিস করেছেন তাইজুল ইসলাম। নিশাঙ্কা তখন ১০ রানে। এই বিশেষ ক্ষেত্রে মুমিনুলের অধিনায়কত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়ে গেছে। কি কারণে পয়েন্টের মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় একজন বিশেষজ্ঞ ফিল্ডার না রেখে বোলারকে রাখা হলো, যিনি এক ওভার আগেই বলে করেছেন? এই ভূল আগেও একবার করেছিলেন মুমিনুল, পয়েন্ট রেখেছিলেন শরীফুলকে। দিনের শুরুতে টানা তিন ওভার মেডেনের পর চতুর্থ ওভারে প্রথম রান দিয়েছিলেন তাসকিন, সেও ওই শরীফুরের মিস ফিল্ডিংয়ে। যেটা এক রান হয় না, পয়েন্টে দাঁড়ানো শরীফুলের বাজে ফিল্ডিংয়ে সেটা হয়েছিলো চার রান !! শরীফুল-তাইজুল; পর পর দুই বার অধিনায়কের একইভুল, মাত্র এক ওভার আগে বল করা বোলারকে, যিনি আবার পয়েন্ট ফিল্ডিং করে অভ্যস্তও না; তাকে কি কারণে পয়েন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে রেখেছিলেন মুমিনুল, সেই পরিকল্পনার আসলেই কি কোন ব্যাখ্যা আছে? ব্যাখা হয় নাকি!! মুমিনুল হকই ভালো জানেন….
এই ভুলের মধ্যেই তাসকিনের অসাধারণ বোলিং আর তাইজুল-মিরাজের সাপোর্টে মোটামুটি ভালোই লড়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্ত শেষ বেলায় টাইগারদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে ডিকওয়েলা-মেন্ডিসের জুটি। চা বিরতির পর ১০ ওভারে শ্রীলংকা রান তুলেছে ৪৪; নিরোশান ডিকওয়েলা এবং রমেশ মেন্ডিসের পার্টনারশিপে ৮৭, সেও আবার ১১৭ বলে। তারপরেই আবার বৃষ্টি। দিনের খেলা শেষ করতে বাধ্য হয়েছেন আম্পায়াররা।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে, শেষ হাসিটা লংকান সিংহদেরই হবার কথা। বাগে পেয়েও ঘায়েল করতে না পারার জেদটাই হয়তো তৃতীয় দিনে হতে পারে টাইগারদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস।
স্কোর কার্ড:
শ্রীলংকা: ৪৬৯/৬ (থিরিমান্নে ১৪০, করুনারত্নে ১১৮, ফার্নান্দো ৮১ )
বাংলাদেশ: তাসকিন ৩/১১৯, তাইজুল ১/৮৩