২৭ জুলাই ২০২৪, শনিবার

ওমানে ‘আদর্শ প্রস্তুতি’ সারলো বাংলাদেশ

- Advertisement -

দুই ওপেনারের অর্ধশতক, শতরানের উদ্বোধনী জুটি, মিডল অর্ডার থেকে ঝড়ো ‘টি-টোয়েন্টি সুলভ’ ইনিংস, ২০০র ওপর সংগ্রহ এরপর ভালো বোলিং-ফিল্ডিংয়ে প্রতিপক্ষকে তার অনেক কমে গুটিয়ে দেওয়া- একটি টি-টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে একটি দল সর্বোচ্চ যা যা চাইতে পারে তার সবই যেন পেয়ে গেলো বাংলাদেশ। ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে নিজেদের অনানুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০৭ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ দাঁড়া করিয়ে প্রতিপক্ষকে ১৪৭ রানে বেঁধে ফেলে ৬০ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে টাইগাররা।

বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সিতে নতুন এক বাংলাদেশেরই যেন দেখা মিললো শুক্রবার। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এই ম্যাচটি খেলেননি, অধিনায়কও তাই নতুন- লিটন দাশ। বিগত দুই সিরিজে মন্থর নিচু উইকেটে রান করতে যে হাঁসফাঁস করছিলেন, মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়ামের পাটা উইকেটে যেন সেটারই সম্পূর্ণ ঝাল ঝাড়লেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথমে ঝড় তোলে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। মাত্র ৬৮ বলে ১০২ রানের জুটি গড়ে এরপর সরাসরি বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান লিটন দাশ; তার আগে খেলেছেন ৩৩ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।

দলকে দুর্দান্ত সূচনা এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার

লিটন ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে ইনিংসটাকে দক্ষতার সাথে এগিয়ে নিয়েছেন নাইম শেখ। ৫৩ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলে আউট না হয়েও ‘বাকিদের সুযোগ দিতে’ ফিরে যান নাইম। এর মাঝখানে অবশ্য ‘ছোটখাটো’ একটি ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে গেছিল টাইগার ব্যাটিং অর্ডারে। সৌম্য সরকার ভালো শুরুর আভাস দিয়েও ফিরে যান, মুশফিকুর রহিম প্রথম বলেই স্কুপ খেলতে গিয়ে মারেন ‘গোল্ডেন ডাক’, আফিফ আগের বলে ছক্কা হাঁকানোর পর পরের বলেও ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন বাউন্ডারি লাইনের অসাধারণ একটি ক্যাচে।

এরপর ঝড় শুরু করেন নুরুল হাসান সোহান। খেলেছেন ১৫ বলে অপরাজিত ৪৯* রানের টর্নেডো ইনিংস। যে ইনিংসে নেই কোন চার, সাতটিই ছক্কা। নিজের বিগ হিটিং এবং উদ্ভাবনী শটের প্রদর্শনীর ঝাঁপি আজ খুলে বসেছিলেন সোহান। শাফল করে অফসাইডের বলকে লেগে টেনে টেনে হাঁকিয়েছেন বিশাল বিশাল ছয়। যার একটিতে বল গিয়ে ফাটিয়ে দিয়েছে কাউ কর্নারে প্রোডাকশন কন্ট্রোল রুমের জানালার কাঁচ!

সোহানের প্রস্তুতিটাই বোধহয় হলো সবচেয়ে আদর্শ!

সোহানের যোগ্য সঙ্গ দিয়ে শামিম হোসেনও খেলেছেন ১০ বলে ১৯* রানের ক্যামিও। সোহান-শামিমের ঝড়েই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২০৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড়া করায় বাংলাদেশ। ওমান ‘এ’ দলের হয়ে দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন আমির কলিম এবং সময় শ্রীবাস্তব।

২০৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুর দুই ওভারেই ওমান ‘এ’ দল হারায় তাদের দুই ওপেনারের উইকেট; রান আসে মাত্র ১০। প্রথম ওভারে নাসুম আহমেদকে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন অক্ষয় প্যাটেল, পরের ওভারেই মাহেদি হাসানের বলে ১ রানে আউট হন আরেক ওপেনার পৃথ্বীকুমার মাচ্ছি; শর্ট লেগে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ ধরেন লিটন দাশ। ওয়ান ডাউনে নামা শোয়েব খানও ফিরে যেতেন এক ওভার পরই। কিন্তু লং অফে তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন নাসুম আহমেদ। পাওয়ারপ্লের শেষ বলে খালিদ কাইলকে উইকেটকিপারের ক্যাচে পরিণত করেন শরিফুল।

দুর্দান্ত একটি ক্যাচ ধরেন লিটন দাশ

পাওয়া ‘জীবন’ ভালোমত কাজে লাগান শোয়েব খান। একপ্রান্ত আগলে রেখে চেষ্টা করেন বিপর্যয় সামাল দিতে, খালিদ কাইলের সাথে ২২ রানের জুটি গড়ার পর আমির কলিমের সাথেও গড়েন ২০ রানের জুটি। তবে ভাগ্য দ্বিতীয়বার সহায় হয়নি শোয়েবের ওপর; ৪০ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে হন রানআউটের শিকার। শোয়েবের আউটের এক বল পরই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ইয়র্কারে বোল্ড হন খুররম নেওয়াজ।

এরপর লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরা মারকুটে ব্যাটিং করে ওমানের সম্মান কিছুট পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করেন। তবে লাভ হয়নি। মাহেদি হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে ১০ বলে ১৯ রানেই থামে মেহরান খানের ইনিংস; ১৪ বলে ১৯ করে আউট হন রউফ আতাউল্লাহ, দুজনের উইকেটই নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। ১০ নম্বরে নামা রাফিউল্লাহর ১৪ বলে ৩১ রানের ইনিংসটি মাঠে আসা ওমান সমর্থকদের মনোরঞ্জন ছাড়া বেশি কিছু করতে পারেনি। ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার পেসার শরিফুল।

৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

বাংলাদেশঃ ২০ ওভার শেষে ২০৭/৪ (নাইম ৬৩, লিটন ৫৩, নুরুল ৪৯*, শামীম ১৯*; আমির কলিম ২/৩৯, সময় শ্রীবাস্তব ২/২৪)

ওমান ‘এ’ দলঃ ২০ ওভার শেষে ১৪৭/৯ (শোয়েব খান ৪৩, রাফিউল্লাহ ৩১*, মেহরান ১৯; শরিফুল ৩/৩০, সাইফউদ্দিন ২/১৭)

 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img