সেঞ্চুরির লেখা, অথচ শিরোনামে কুইন্টন ডি ককের অবসরে না যাওয়ার আবেদন! কারণটা জানানো উচিত শুরুতে। মাঠে অনেক দর্শকই অসংখ্য আবদার নিয়ে উপস্থিত হোন, তেমনই একজনকে চোখে পড়ল ম্যাচ শুরুর আগে। হাতে প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা, “কুইন্টন, প্লিজ অবসরে যেও না”।
বয়স মাত্র ৩০, এই বয়সেই নিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত। বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রিকার শেষ ম্যাচটাই যে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে ডি ককের শেষ ম্যাচ, সেটা জানিয়েই এসেছেন বিশ্বকাপ খেলতে। নিজের শেষটা জানেন বলেই কি না, ডি কক বোঝেন তার হারানোর নেই তেমন কিছু বরং শেষবেলায় দেশকে দেয়ার আছে অনেক। আর সেই তাড়না থেকেই কি না এমন পারফর্ম্যান্স!
বিশ্বকাপে আসার আগের বিশ মাসে কোনো শতকের দেখা পাননি এই ফরম্যাটে, অথচ সতেরো দিনের ব্যবধানেই ডি ককের তিন সেঞ্চুরি! শ্রীলঙ্কা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা শতকের পর বেছে নিলেন বাংলাদেশকেই, সেটাও নিজের ১৫০তম ম্যাচে! এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে, তখন প্রোটিয়া ওপেনার অপরাজিত ১০০ রানে। বিশ্বকাপে এখন অব্দি সবচেয়ে বেশি রান করা ভিরাট কোহলিকে টপকাতে প্রয়োজন আর মাত্র ২১!

ওয়ানডে ক্রিকেট তার কাছে কিছুটা বিরক্তির, কিন্তু এখনও যে এই ফরম্যাটটার অনেক মূল্য আছে ডি ককের কাছে, বিশ্বকাপের এই ইনিংসগুলোই বোধহয় তার প্রমাণ। বয়স ৩১ না হতেই অবসর নিচ্ছেন ঠিক, কিন্তু এই ফরম্যাটটায় নিজ দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা একজন হয়েই ছাড়ছেন ওডিআই। নামের পাশে ২০ সেঞ্চুরি, তার চেয়ে বেশি আছে শুধুই হাশিম আমলা (২৭), এবিডি ভিলিয়ার্স (২৫) এবং হার্শেল গিবসের (২১)।
এমনকি,সাউথ আফ্রিকার হয়ে বর্তমানে খেলছে এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রানও ডি ককের, সাড়ে ৬ হাজারের বেশি রান করা কুইন্টনের ধারের কাছেও নেই কেউ। দ্বিতীয় অবস্থানে যিনি, সেই ডেভিড মিলারের রান ৪১৯৪!
৩০ বছর বয়সেই যিনি এতটা দিয়েছেন দেশের ক্রিকেটকে, সেই কুইন্টন ডি কক এতদ্রুত অবসর নিক কে চাইবে? সেকারণেই তো ওয়াংখেড়ের সেই দর্শকের লেখাটা চোখে ভাসছে, “কুইন্টন, প্লিজ অবসরে যেও না”।