স্কট বোল্যান্ডের কাছে হয়তো সবকিছুই স্বপ্নের মতো লাগছে। অভিষেকেই নিজের ছয় উইকেট অর্জনটাকে হয়তো তার কাছে এইমুহুর্তে মনে হচ্ছে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড মিউজিয়ামের লেজার ফেলানো মঞ্চের শেন ওয়ার্নের তথ্যচিত্র। লাইট জ্বলতেই বুঝি শেষ হয়ে যাবে এই রুপকথা!
স্বপ্নের মেলবোর্ন, বোল্যান্ডের অবশ্য নিজের ঘরের মাঠ। স্কোয়াডে প্রথমে ছিল না কোনো পরিবর্তন, বোল্যান্ড তৃতীয় টেস্টের আগে অজিদের শেষ মুহুর্তের সংযোজন। আচমকা স্কোয়াডে ভিক্টোরিয়ার পেসার, একাদশেও জায়গাটা পেয়ে গেলেন চোখের পলক ফেলতেই। প্রথম ইনিংসে মাত্র এক উইকেট, কপালে চিন্তার ভাঁজ। কিন্তু, দ্বিতীয় ইনিংসে যা করলেন, পুরো ক্যারিয়ারে বোল্যান্ডের সাথে যাই ঘটুক না কেনো তবুও হয়ে রবে চিরদিনের জন্য স্পেশাল। চার ওভারে সাত রান দিয়ে ছয় উইকেট, কম রানে ছয় উইকেট নেয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথমটিতে অবশ্য বাংলাদেশের নাম আছে জড়িয়ে। ২০০২ সালে ঢাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিবায়ান পেসার জার্মাইন লওসন নিয়েছিলেন তিন রানে ছয়টি।
বোল্যান্ড যখন একের পর এক উইকেট এনে দিচ্ছেন দলকে, স্টেডিয়াম জুড়ে তখন ‘বোল্যান্ড বোল্যান্ড’। অস্ট্রেলিয়ানরা হাঁটতে পছন্দ করেন, পছন্দ করেন দলবেঁধে দৌড়তে। আওয়াজটাও দেন একসাথেই, একই সুরে। স্টেডিয়ামে বোল্যান্ডের পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন, ছিলেন বন্ধু বান্ধবদের একাংশও। তারাও হয়তো হেঁটে হেঁটেই এসেছিলেন!
নদীর পাশেই ভিক্টোরিয়া পার্ক, ভিক্টোরিয়া পেরোতেই ইয়ারা পার্কের সারি সারি গাছের সৌন্দর্য যে কারোর দৃষ্টি কেড়ে নিতে সক্ষম। গাছগুলোর সাথেই ইয়ারা নদী, যার ওপর মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। সেই মেলবোর্ন নিয়ে কম রুপকথা লেখা হয়নি, অ্যাশেজের তৃতীয় ম্যাচে রুপকথার মেলবোর্নে বোল্যান্ড লিখলেন তার রুপকথাও।
Incredible, @sboland24 🤩#Ashes pic.twitter.com/xpc7yzHxVh
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) December 28, 2021
একা হাতে গুড়িয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ড ব্যাটিং লাইনআপ, অভিষেকেই হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। স্কোয়াডে থাকবেন সেই স্বপ্নটাও হয়তো দেখতে ভয় পেতেন প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউডদের ভীড়ে। সেই বোল্যান্ডই এই মুহুর্তের জন্য অস্ট্রলিয়া ক্রিকেটে অনেক বড় এক বিস্ময়ের নাম, সবচেয়ে বড় সুপার হিরো।
ম্যাচ শেষে বেশী কিছু বলতে পারেননি বোল্যান্ড, শুধু এতোটুকুই বলেছেন, “ভীষণ গর্ববোধ হচ্ছে। দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। ভাবিনি এমন কিছু করতে পারব। জীবনের সেরা মুহুর্ত এটা। আমার কথাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, ধন্যবাদ।”
এমন পারফরম্যান্সের পর তো কথা হারিয়ে যাওয়ারই কথা…