১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার

গার্সিয়ার “বলিদান” ও ডিপে-বীরত্বে শেষরক্ষা বার্সেলোনার

- Advertisement -

লা লিগায় অ্যাতলেতিকো বিলবাওয়ের মাঠে পয়েন্ট হারিয়েছে বার্সেলোনা। বিলবাও ফরোয়ার্ড  ইনিগো মার্টিনেজের গোলে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচের ম্যাচের ৭৫ মিনিটে ডাচ ফরোয়ার্ড মেম্ফিস ডিপের গোলে ১-১ সমতায় ফেরে বার্সা। ম্যাচের শেষ মিনিটে গোল বাঁচাতে এরিক গার্সিয়ার বলিদানে ওই ১-১ স্কোরলাইনের ড্রয়েই শেষ হয় ম্যাচ।

মেসিবিহীন, নিজেদের নতুন করে খুঁজতে থাকা বার্সেলোনাকে ঘরের মাঠে পেয়ে জেতার জন্য শুরু থেকেই মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে অ্যাতলেটিকো বিলবাও। মুহুর্মুহু আক্রমণ শানাতে থাকে বার্সার ডিবক্সে। কিন্তু রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষক পেদ্রো নেতোর দৃঢ়তায় কোন আক্রমণ ফলপ্রসূ হয়না প্রথমভাগে। ওইহান সানচেজ একটি শট বারে লাগান। অপরদিকে বার্সেলোনার আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা তেমন একটা সুযোগ তো সৃষ্টি করতে পারেইনি, সহজ সুযোগ মিস করেছেন মার্টিন ব্রাথওয়েট।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল করে এগিয়ে যায় বিলবাও। ইকার মুনিয়াইনের কর্নারে মাথা ছোয়ান ইনিগো মার্টিনেজ। এরপর অনেক চেষ্টা করেও গোলমুখ খুলতে পারছিল না বার্সেলোনা। মেসিবিহীন আক্রমণভাগকে মনে হচ্ছিল দিশেহারা, ছন্নছাড়া। অবশেষে ত্রাণকর্তা হলেন নতুন সাইনিং মেম্ফিস ডিপে। ৭৫ মিনিটের সময় বাঁ প্রান্ত দিয়ে কঠিন একটি অ্যাঙ্গেল থেকে দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়ান ডিপে। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ডাচ ফরওয়ার্ডের প্রথম আনুষ্ঠানিক গোলে সমতায় ফেরে বার্সেলোনা।

ইনজুরি টাইমের একদম শেষ মিনিটে রাইট ফ্ল্যাঙ্কে হঠাৎ বল পান বিলবাও ফরওয়ার্ড ইনাকি উইলিয়ামস। পেয়েই ছুট! সান মামেস স্টেডিয়ামে উত্তেজনা তখন টানটান। ঘরের মাঠে অ্যাতলেটিকো বিলবাও বার্সেলোনাকে হারিয়ে ৩ পয়েন্ট দখল করতে পারবে কি না, গত এপ্রিলে কোপা ডেল রে ফাইনালের সেই ৪-০ ব্যবধানে হারের ক্ষতে সামান্য প্রলেপ লাগাতে পারবে কিনা, মৌসুমের শুরুতেই একটা অঘটন জন্ম দিতে পারবে কিনা, সবই যেন নির্ভর করছিল উইলিয়ামসের ঐ শেষ চেষ্টার উপর! কিন্তু বার্সেলোনার যে একজন এরিক গার্সিয়াও ছিলেন!

আনুষ্ঠানিকভাবে মাত্রই দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছেন নতুন ক্লাবের হয়ে। প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচ। ম্যাচের আগে শুনেছেন দাদার মৃত্যুসংবাদ। মরার উপর খাড়ার ঘা, ৩০ মিনিটের সময় অভিজ্ঞ সিনিয়র জেরার্ড পিকে চোটে মাঠ ছাড়ার পর চাপও বেড়ে যায়। গোটা ম্যাচেই নিজের চেনা ছন্দকে হারিয়ে খুঁজছিলেন স্প্যানিশ রক্ষণের এই তরুণ তুর্কী।

কিন্তু জিরো থেকে হিরো হবার জন্য তো প্রয়োজন একটা সুযোগ, একটা মুহূর্ত মাত্র! ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তগুলিতেই সেটা পেয়ে গেলেন গার্সিয়া। উইলিয়ামসের দৌড় ঠেকাতে প্রানপণে ছুটলেন। গায়ের জোরে কোনভাবেই ঠেকাতে না পেরে শেষ চেষ্টা হিসেবে পেছন থেকে রাফ ট্যাকল করে তাকে ফেলে দিলেন ডি বক্সের ঠিক এক ফুট আগে। এর আগে এই উইলিয়ামসকে ট্যাকল করেই হলুদ কার্ড খেয়েছিলেন, এবার খেলেন লাল কার্ড। কিন্তু সেখানেই তো শেষ করে দিলেন বিলবাওয়ের ম্যাচ জেতার শেষ আশাটুকুও! ১-১ এ শেষ হল খেলা। লাল কার্ড পেয়েও নায়ক হয়েই মাঠ ছাড়লেন এরিক গার্সিয়া।

ম্যাচশেষে কোচ রোনাল্ড কোম্যানের মুখ দিয়ে বেরিয়েছে গার্সিয়াকে নিয়ে প্রশংসাবাণী। “দাদার মৃত্যুসংবাদ পাবার পরেও সে খেলতে চেয়েছিল। এটাই তার অসাধারণ পেশাদারিত্বের প্রমাণ। লাল কার্ড পাওয়াটা দুঃখজনক। আশাকরি সে শোক দ্রুত কাটিয়ে উঠবে”

মেসির অভাব প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে একটু যেন কড়াভাবেই কুম্যান বলেন,”আমি একই জিনিস নিয়ে বারবার কথা বলতে পছন্দ করিনা, তবে বিষয়টা যখন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের, প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। অবশ্যই মেসির উপস্থিতি প্রতিপক্ষের মনে অনেক বেশি ভীতিসঞ্চার করে। আমাদের জন্যও সে গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ তাকে বল পাস দেওয়া হলে সে বল হারাত না, যেটা আজ আমরা বিস্তর হারিয়েছি। আমরা সবাই তাঁর অনুপস্থিতি টের পাচ্ছি। কিন্তু যা হবার তা হয়ে গেছে, এখন আর তা পরিবর্তন করার সুযোগ তো নেই”

বার্সেলোনার পরের ম্যাচ নিজেদের ঘরের মাঠে গেটাফে’র বিপক্ষে ২৯শে আগস্ট।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img