২৭ জুলাই ২০২৪, শনিবার

উইন্ডিজকে দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

- Advertisement -

সিরিজ নিশ্চিত হয়েছে আগেই, অপেক্ষা ছিল হোয়াইটওয়াশের। সেটাও অনায়াসেই করে ফেলেছে টাইগাররা। টানা তিন ম্যাচ জিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ সুপার লিগে  ৩০ পয়েন্ট যোগ করলো তামিমের বাংলাদেশ। ১২০ রানে তৃতীয় ওয়ানডে জিতে ক্যারিবিয়ানদের দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করলো। আর ঘরের মাঠে প্রথম হোয়াইটওয়াশ। ২০০৯ সালে ক্যারিবিয়ানদের প্রথম হোয়াইটওয়াশ করেছিল তাদের মাটিতেই।

ম্যাচ জিততে ২৯৮ রানের টার্গেটটা ক্যারিবিয়ানদের জন্য ছিল পাহাড়সম। কারণ এই সিরিজে তাদের নড়বড়ে অবস্থাই বলে দিচ্ছিল এই লক্ষ্য তারা ছুঁতে পারবেনা। তবে দেড়শো পেরিয়েছে এটাই তাদের কাছে এখন বড় স্বস্তি। তাও রোভম্যান পাওয়েলের কল্যাণে।

শেষ দশ ওভারে ১৪৪ দরকার ছিল ক্যারিবিয়ানদের, হাতে চার উইকেট। জয়ের সমীকরণ মিলাতে পারবেনা তারাও জানতেন। তারপরও পরাজয়ের ব্যবধান যতটুকু কমানো যায়। উইন্ডিজের ব্যাটিংয়ে হাইলাইটস বলতে চতুর্থ এবং অষ্টম উইকেট জুটির লড়াই। জেসন মুহাম্মদ এবং বনার ৩২ রান যোগ করেন। এরপর রেফারকে নিয়ে বাকিটা সময় স্কোরবোর্ডে অবদান রাখার চেষ্টা করেন পাওয়েল। সেই চেষ্টা বৃথা গিয়েছে। নিজের হাফ সেঞ্চুরিটাও করতে পারননি পাওয়েল। ৩৪ রানের এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন সৌম্য সরকার। ৪৭ রানে এলবিডব্লু হন রোভম্যান পাওয়েল। একসময় মনে হয়েছিল পুরো ৫০ ওভারই খেলতে চায় ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু পাওয়লের বিদায়ে তারা শেষ চার উইকেট হারিয়েছে ২২ রানে। ৪৪ ওভার দুই বলে ১৭৭ রানে থামে উইন্ডিজের ইনিংস। ৫১ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের দিন সেরা বোলার সাইফুদ্দিন। এছাড়া মিরাজ এবং মোস্তাফিজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

তার আগে টস হেরে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের গল্প বলতে সিনিয়রদের ব্যাটে প্রত্যাশিত রান। কিন্তু শুধু লিটন এবং শান্ত’র ব্যর্থতার ছাপ ছিল এই ম্যাচেও। এ দু’জনের ব্যর্থতা ছাড়া বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানরা স্বাচ্ছ্যন্দেই ব্যাট চাালিয়েছেন। আগের দুই ম্যাচে লিটন দাসের রান ছিল ১৪ ও ২২। আর তৃতীয় ম্যাচে এসে শূন্যতেই আউট। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালে যোগ্য সঙ্গী হিসেবে নিজের অবস্থানকে দুর্বল করে ফেলছেন এই ওপেনার। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে আল জারি জোসেফের এলবিতে কাটা পড়েন লিটন। আর নাজমুল হোসেন শান্ত কি লম্বা সময় দলের বাইরে যাওয়া নিশ্চিত করে ফেললেন এই ম্যাচ দিয়ে? পরপর তিন ম্যাচে সুপার ফ্লপ। সাকিব আল হাসানের পছন্দের জায়গা তিন নাম্বারে জায়গা পেয়েও শান্ত আস্থার প্রতিদান দিতে পারলেন না। ৩০ বলে ২০ রান করে আউট হয়েছেন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। সামনে নিউজিল্যান্ড সিরিজ আছে। তিন নাম্বার জায়গায় কি আবারও পরীক্ষা চালাবে নাকি শান্তকেই বিবেচনায় নিবে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট! সেটা সময়ই বলে দিবে।

সাকিবের বিদায়ের পর রানের গতি বেড়েছিল বাংলাদেশের, গতি বাড়ান মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। সাকিব-তামিমের জুটি ছিল ৯২ রানের। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ হয়েছে ৭২ রানের। মুশফিককে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন রেফার। ব্যাটিংয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু সাতে নিজেকে মানিয়ে নিতে সময় চাই তাঁর আরো, ব্যাটিংয়ে এমন ছাপই রেখে গেলেন। মাত্র ৭ রান করে আউট হন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ ৬৪ রানে। । মজার বিষয় হচ্ছে এই ম্যাচে ৬৪ রানের হ্যাটট্রিক করেছে বাংলাদেশ। তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ তিনজনই করেছেন ৬৪ রান করে। সাকিব করেন ৫১। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিক আর সিরিজ সেরা সাকিব আল হাসান। প্রায় এক বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রত্যাবর্তনটা স্মরণীয় হয়ে থাকলো।  হোক যে কোন মানের দল, ক্রিকেট ইতিহাসে লেখা থাকবে বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ২৯৭/৬ ( তামিম ৬৪, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*, সাকিব ৫১)
উইন্ডিজ ১৭৭ ( পাওয়েল ৪৭, বনার ৩১) সাইফউদ্দিন ৩/৫১, মোস্তাফিজ ২/২৪, মিরাজ ২/১৮
- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img