২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার

দেশের হয়ে খেলার জন্য যদি জীবনটাও চলে যায়, তবে যাক না!

- Advertisement -

রাত সাড়ে বারোটা বাজতে চলেছে প্রায়, হঠাৎ করেই বুকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। পাশে তার পরিবার, ওত রাত্রে পরিবারকে চিন্তায় ফেলতে চান না বলেই হয়তো ‘নীচ থেকে আসছি’ বলে হাসপাতালে চলে যান পাকিস্তান ওপেনার। শ্বাস নিতে পারছেন না, চোখের সামনে নেমে আসছে অন্ধকার। এমন সময়ে নার্স জানালেন, ‘আর বিশটা মিনিট দেরী হলে হয়তো ছিড়ে যেত দুইটি টিউবই!’

“আমার ভীষন খারাপ লাগছিল। আমার পরিবার ছিল আমার সাথে। তাদের বলেছিলাম যে আমি হোটেলে ইসিজি করার জন্য নীচে যাচ্ছি। এরপর আমি হাসপাতালে চলে যাই। আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমার দুইটি টিউবই একটু একটু করে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ডাক্তাররা আমায় কিছু জানায়নি। পরে আমি একজন নার্সকে জিজ্ঞাসা  করলে তিনি আমাকে জানান যে আমি আর ২০ মিনিট দেরী করলে আমার দুইটি টিউবই ছিঁড়ে যেত।”

আইসিইউতে রিজওয়ান

রিজওয়ান ততোদিনে জায়গা করে নিয়েছেন ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয়ে। যেই হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন, সেখানে যিনি পর্যবেক্ষণ করছিলেন পাকিস্তান তারকাকে, তিনি ভীষণভাবে চাচ্ছিলেন রিজওয়ান খেলুক সেমিফাইনালটায়। কিন্তু, পাকিস্তান ওপেনারের স্বাস্থ্য ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। সেমিফাইনালে খেলতে পারবেন না রিজওয়ান এটা তখন প্রায় নিশ্চিত। ডাক্তার জানালেনও সে কথা। কিন্তু, রিজওয়ান যে খেলছেন দেশের জন্য! তাই সেমিফাইনাল খেলার কারণে যদি তার মৃত্যুও হয়, তাতেও আপত্তি নেই পাকিস্তান তারকার।

“ডাক্তারের কথা আমার মনে আছে। তিনি মনেপ্রাণে চাইতেন আমি সেমিফাইনাল ম্যাচটা খেলি। কিন্তু, যখন সে আমায় বললো ‘তোমার অবস্থা ভালো না’ তখন আমি তাকে বলেছিলাম, ‘ম্যাচের পরে যদি আমার কিছু হয়েও যায় তাতেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ, সবকিছুই পাকিস্তানের জন্য।’ এই কথাগুলো তাদেরকেও অনুপ্রাণিত করেছিল এবং তারা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছে যাতে আমি সেমিফাইনাল ম্যাচেই ফিরতে পারি।”

আইসিইউ থেকে ফিরে খেলেছেন নিজের সেরাটা দিয়ে

প্রায় ৩৫ ঘন্টা আইসিইউতে কাঁটিয়ে সেমিফাইনাল ম্যাচে বীরের বেশে মাঠে ফিরেছিলেন রিজওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলেও পাকিস্তান ওপেনার খেলেছিলেন ৫২ বলে ৬৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। সেমিফাইনালে হেরে বাংলাদেশে পা রাখার পর সোমবার অনুশীলন করেছে পাকিস্তান দল। রিজওয়ানকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম, কিন্তু পাকিস্তান তারকা অনুশীলনে ফিরতে চান মঙ্গলবারেই। মন যে পরে থাকে ঐ সবুজ ঘাসের মাঠটাতেই!

“প্রথমে তো নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো। এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। দলের ডাক্তার, ফিজিও সকলেই বিশ্রাম দিয়েছিলো। কালকে থেকে ইনশাআল্লাহ অনুশীলনে ফিরবো।”

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img