দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের দুইদিন শেষে সমানে-সমানে লড়ে যাচ্ছে ওয়েস্টইন্ডিজ-পাকিস্তান দুই দলই। রানের হিসেবে হয়তো দ্বিতীয় দিন শেষে ৩৪ রানে এগিয়ে ক্রেগ ব্রাফেটের দল, কিন্তু ম্যাচে যে একিবারে পিছিয়ে নেই পাকিস্তানও সেটা তাদের পারফরম্যান্সই বলে দেয়। কিন্তু, দ্বিতীয় দিনের একদম শেষদিকে গিয়ে ক্যারিবিয়ানদের হতাশ করেছেন ব্রাফেট, ব্যক্তিগত ৯৭ রানে রানআউট হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে।
বলা হয়, দিনের শুরুটাই বলে দেয় সারাদিন কেমন যাবে, এজন্য শুরুটা ভালোও করতে চান সবাই। ওয়েস্টইন্ডিজও নিশ্চয়ই দারুণ কিছুই করতে চেয়েছিলো, কিন্তু, পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আব্বাসের দুই বলেই ব্যক্তিগত ০ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন কিরন পাওয়েল, এনক্রুমা বোনার দুজনই। শুরুতেই দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে দিশেহারা ওয়েস্টন্ডিজকে পথে ফেরানোর কাজটাতেও সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক ব্রাফেট। টেস্ট অধিনায়কদের তো এমনি হতে হয়, দলের বিপর্যয়ে দাঁতে দাঁত চেপে টিকে থাকবেন ক্রিজে, সতীর্থদের নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে নেবেন দলকে।
দলীয় ১ রানেই ২টি উইকেট হারানোর পর রোস্টন চেস, জার্মেই ব্লাকউডকে নিয়ে ইনিংস বড় করার কাজটা করেন ব্রাফেট। ছোট ছোট জুটি গড়েছেন, কিন্তু দলের জন্য ছিল ভীষণ কার্যকরি। চেসের সাথে ৫০ রানের জুটি, ব্লাকউডের সাথে ৪৯ রানের। রোস্টন চেস করেন ২১ রান। ২২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ব্লাকউড; দলীয় ১০০ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে আব্বাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে যখন তিনি ড্রেসিং রুমে ফিরছেন, তখন কে জানতো পরের বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পরে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হবে কাইল মায়ার্সকেও। দিনের শুরুতেই টানা দুই বলে দুই উইকেট হারানোর পর, ইনিংসের মাঝপথেও টানা দুই বলে দুইটি উইকেট হারালো ক্যারিবিয়ানরা। গল্পটাও একইরকম, শুধু আব্বাসের জায়গায় এবার ঘাতক শাহিন শাহ।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বেশি রান তোলে ওয়েস্টইন্ডিজ, জেসন হোল্ডারকে নিয়ে ব্রাফেট স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৯৬ রান। হোল্ডার ব্যক্তিগত ৫৮ রানে ফাহিম আশরাফের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ না তুলে দিলে রানের সংখ্যাটা যে আরও বাড়তো সেটা অনুমান করাই যায়। দিনের শেষভাগে যখন দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হবার পথে প্রায়, সেই সময়েই ভুল করে বসলেন ব্রাফেট। ইয়াসির শাহর বলটাকে লেগ সাইডে ঠেলে দিয়ে ২ রান নেবার চেষ্টা অধিনায়কের; হাসান আলির থ্রোটা ডিরেক্ট গিয়ে লাগলো ব্যাটিং প্রান্তের স্ট্যাম্পে। পাকিস্তানের আবেদন এবং অধিনায়ক আউট! টেস্ট ক্রিকেটে রান আউট, তাও আবার ৯৭ রানে! দ্বিতীয় দিন শেষে ওয়েস্টইন্ডিজের সংগ্রহ ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫১; পাকিস্তানের চেয়ে ৩৪ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে ক্যারিবিয়রা।
এরআগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। বাবর আজম, ফাওয়াদ আলম এবং ফাহিম আশরাফ ছাড়া পিচে সেভাবে থিতু হতে পারেননি কেউই। সর্বোচ্চ ৫৬ রান আসে ফাওয়াদের ব্যাট থেকে; দলের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি। ৪৪ রান করে রান আউট হন দুর্দান্ত খেলতে থাকা ফাহিম, অধিনায়ক বাবরের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। ওয়েস্টইন্ডিজের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন জেসন হোল্ডার এবং জ্যাদেন সিলস।