‘এটাই আমার ঘর, এখানে আমি আবার ফিরব।’ শ্রাবণের অঝোর ধারার মতো চোখ বেয়ে পড়ে নোনা জল, বই-পুস্তকের ভাষায় যেটাকে আমরা কান্না বলি। সেই কান্নাভেজা কন্ঠে বার্সেলোনা থেকে বিদায়বেলায় উপরের কথাগুলোই অবলীলায় বলছিলেন লিওনেল মেসি। মেসির ঘরটা ন্যু-ক্যাম্প, আর বার্সেলোনার মেসি সেখানেই ফিরতে চান- আরও একবার!
মঞ্চ প্রস্তুত, লক্ষ লক্ষ চোখ তখন নায়কের অপেক্ষায়। নায়ক আসলেন, যাকে আমরা ফুটবল জাদুকর বলি। লিওনেল মেসি মাস্ক খুললেন, পোডিয়ামে পা দিবেন এমন সময় মনের অজান্তেই মেসির চোখ বেয়ে কান্না ঝড়ল। যেন মনের কথা, বার্সা ছাড়ার ব্যথা প্রকাশ পেল অশ্রুজলে। লিওনেল মেসি বলে কথা, যার কান্নাতেও থাকবে সবার আগ্রহ! এটাই তো স্বাভাবিক।
মেসির কান্না ঝড়ে পড়ার আগেই সেটাকে স্ম্রৃতিতে ধরে রাখতে চাইলেন প্রিয়তমা স্ত্রী আন্তেনিল্লো রোকুজ্জে। মেসির হাতে টিস্যু পেপার বাড়িয়ে দিলেন, মেসি সেই টিস্যুতে এঁকে রাখলেন একুশ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার স্মৃতিপট। মেসির কান্নায় কেঁদেছেন জেরার্দ পিকে থেকে ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ং পর্যন্ত সবাই। মেসির কান্নায় চোখে জল এসেছে কত কত সাংবাদিকের। একজন খেলোয়াড়ের জন্য এত এত মানুষের চোখে জল- কে কবে দেখেছিল?
মেসি বিদায় নিয়েছেন তবে কখনোই ভাবতে পারেননি এমনও দিনও আসবে। বার্সাতে মেসির শুরু, মেসি চেয়েছিলেন শেষটাও করবেন লাল-নীল ডোরাকাটা জার্সিতে। তা আর হলো কই?
“এমন দিন কখনো আসবে এটা আমি ভাবতেই পারিনি। আমি চেয়েছিলাম এখানেই ক্যারিয়ার শেষ করব”- বিদায়বেলায় লিওনেল মেসি
মেসির আক্ষেপ আছে আরো। মেসি বার্সেলোনা ছাড়তে চেয়েছিলেন একেবারে, বুটজোড়া শো-কেসে তুলে রেখে। চেয়েছিলেন ফুটবলকে বিদায় বলবেন ন্যু-ক্যাম্পেই, লক্ষ লক্ষ মানুষের কড়তালিতে। কিন্তু শেষ দেড় বছর তো মাঠে দর্শকই নেই, কে বিদায় জানাবেন ক্ষুদে জাদুকরকে?
“আমার ইচ্ছা ছিল ফুটবল থেকে বিদায় নিব ন্যু-ক্যাম্পে। লক্ষ লক্ষ মানুষ কড়তালি জানাবে। সেটা আর হলো না’’