২৭ জুলাই ২০২৪, শনিবার

বিদায় কমরেড

- Advertisement -

হাসান শাওন: ফুটবল তারকা তো জন্ম নেন বছর বছর। কিন্তু এক ম্যারাডোনা জন্মান সহস্রাব্দে একবারই। কখনও ভুলে যাননি দারিদ্রপীড়িত শৈশব। খেলা ছেড়েছেন কিন্তু দর্শক হিসেবে বসেছেন সাধারণের গ্যালারিতে। ভিভিআইপি বক্সে নয় কোনোদিনই।

তারকাদের জীবনে কিছু অন্ধকার অধ্যায় থাকে। ম্যারাডোনা এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। জড়িয়েছেন মাদক, নারী, ট্যাক্স ফাঁকিসহ সাংবাদিক আক্রমণের মতো কিছু নেতিবাচক ঘটনায়। তবু তিনি অন্য উচ্চতায়। ম্যানেজার বেষ্টিত জীবন নয়। চলেছেন নিজের মর্জিমাফিক। নিজের মতোন নিজস্বতায়। চরিত্র স্বভাবে তিনি যেন বাঙালি। বাঙালির মতোই আবেগী এক স্বত্ত্বার মানুষ ছিলেন এই ফুটবল ঈশ্বর। এজন্যই তো আজ অশ্রু বাঙালির চোখে চোখে।

মাদক গ্রহণ করেছেন। আবার তা স্বীকারও করেছেন। চিকিৎসা নিয়েছেন বিশ্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকা স্বাস্থ্য খাতের দেশ কিউবায়। এখানেই পরিচয় দুনিয়া কাঁপানো বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাথে। হাতে ট্যাটো এঁকেছেন দুনিয়ায় লড়াইয়ের প্রতিশব্দ হয়ে থাকা মায়েস্ত্রো গেরিলা চে গুয়েভারার। ডলারের ছড়াছড়িতেও নিজের ল্যাতিন স্বত্ত্বাকে কখনও ভোলেননি যিনি। বন্ধুতা পাতিয়েছেন তাদের সাথেই। জীবিত হুগো শ্যাভেজকে আলিঙ্গন করেছেন। বন্ধুত্ব ছিল ইভো মোরালেসের সঙ্গেও। আমৃত্যু সোচ্চার ছিলেন বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থবাহী ফিফার বিরুদ্ধে। গর্জে উঠেছেন এ সংস্থার প্রতিটি জুলুমের বিরুদ্ধে।

৮৬, ৯০ তে ছিলাম অনেক ছোট্ট। মনে আছে ৯৪ এর ম্যারাডোনাকে। ২২ জনের মাঠে কিভাবে একজন তারকা হয়ে ওঠেন তা টের পেয়েছিলাম। পড়ন্ত বেলায়ও ফর্ম পড়েনি এতোটুকু।

ছোটবেলার আমরা ছিলাম ব্রাজিল গোঁড়া। তবু পরিবারের শিক্ষায় চিরদিনই শ্রদ্ধা করেছি ভিন্ন মত, পথ আর পৃথিবীর বৈচিত্রকে। অনেক নেতিবাচকতার ম্যারাডোনাকে ভেবেছি আপন।

যে আনন্দ তিনি দিয়েছেন, নিশ্চয়ই তা ফিরে ফিরে আসবে তাঁর অনন্তলোকের জীবনে। করুণাময়ের অপার ক্ষমায় স্নিগ্ধ হোন দিয়েগো। বিদায় কমরেড!

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img