২৭ জুলাই ২০২৪, শনিবার

ভিভ রিচার্ডস: কিংবদন্তিদের কিংবদন্তি

- Advertisement -

ডেসমন্ড হেইন্স অথবা গর্ডন গ্রিনিজ; দুজনের মধ্যে কেউ একজন প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে, আফসোসে পোড়ার চেয়ে ক্যারিবিয়ান সমর্থকেরা বরং অপেক্ষা শেষের উচ্ছ্বাসে ভাসতেন বেশি। কেননা, মুখে চুইংগাম আর আর মাথায় মেরুন টুপি পরে নামতেন “কিং ভিভ”। চিরচেনা সেই দৃশ্যের স্বাক্ষী হবার উচ্ছ্বাস শেষ পর্যন্ত ছিল প্রায় একই রকম। ড্রেসিংরুম থেকে বাইশ গজের পথে হাঁটতে শুরু করছেন, ভিভ রিচার্ডস। স্যার আইজাক ভিভিয়ান আলেকজান্ডার রিচার্ডস।

রিচার্ডস যখন খেলতেন তখন তার প্রতিপক্ষের বোলার ছিলেন ইমরান খান, জেফ থমসন, ডেনিস লিলির মতো কিংবদন্তিরা। তবে একজন ছিলেন, তিনি কিংবদন্তিদের কিংবদন্তি। যতো কিছু হোক, কখনও বিমার কিংবা বাউন্সার, ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ’মাস্টার ব্লাস্টার’ কখনও হেলমেট পড়েননি। ড্রামা কিংবা সাসপেন্স, সত্তর-আশি দশকে বিখ্যাত সব ইতিহাসের জন্ম তারই ব্যাটে। প্রতিপক্ষের জন্য ছিলেন দুঃস্বপ্ন, পুরো বিশ্বের কাছে, সত্যিকারের এন্টারটেইনার।

ভিভ রিচার্ডস যখন খেলতেন তখন আধুনিক ক্রিকেটের ম্যাড়ম্যাড়ে উইকেট ছিল না, ছিল না পাওয়ার-প্লে, ছোট বাউন্ডারি আর বোলারদের আটকে রাখার দাপ্তরিক চেষ্টা। তখনও ভিভ রিচার্ডস খেলতেন, মারতেন, ছয় আউন্সের বলটা যেন তার ব্যাটের কথাই শুনতো। সত্তরের দশকে ভারতের চেন্নস্বামী স্টেডিয়ামে অভিষেক, গোটা ক্যারিয়ারে একশোর বেশি টেস্ট খেলেছেন, পঞ্চাশের বেশি গড়, সবচেয়ে বেশি অবাক করবে তার স্ট্রাইক রেট, পঁচাশির বেশি; যা ওই সময়ের তো বটেই, এখনকার ক্রিকেটের বিবেচনায়ও “অবিশ্বাস্য” রকমের অবিশ্বাস্য !! টেস্ট অভিষেকের দুই বছর পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজ জার্সিতে ওয়ানডে খেলেছেন, সাতচল্লিশ গড় আর নব্বইয়ের বেশি স্ট্রাইকরেটে প্রায় সাত হাজার রান। এমনিতেই তো আর “কিং ভিভ” নাম হয়নি!!

১৯৮৬ সালের পনেরোই এপ্রিল বিকেল ভিভ রিচার্ডসকে দিয়েছিল “ক্রিকেট অমরত্ব”। ছাপ্পান্ন বলে টেস্ট সেঞ্চুরি। একটি টেস্ট ইনিংস যেখানে তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সবাইকে, যা পরবর্তী একত্রিশ বছর ছিল টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। শেষমেশ সেই ইনিংসে ভিভ অপরাজিত ছিলেন, আটান্ন বলে একশ দশ। তার ওই ইনিংস এতটাই নিঁখুত ছিল যে, এক ক্রিকেট বিশ্লেষক বলেছিল, ভিভের ওই ইনিংসে সন্দেহের জায়গা বলতে ছিল, তারা মারা বলটা চার হয়েছে নাকি ছয়।

‘Hitting across the line’  খেলতে পছন্দ করতেন ভিভ রিচার্ডস। তাই হয়তো নিজের আত্মজীবনীর নামও রেখেছিলেন ‘Hitting across the line’। সেই যুগে এই ‘Hitting across the line’কে বিবেচনা করা হতো মস্তবড় অপরাধ হিসেবে। তবে এক ছিলেন, যিনি এতকিছুর তোয়াক্কা করতেন না, যার ব্যাটিং দর্শনই ছিলো “অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স”

উইজডেনের ভাষায়, ‘possibly the most destructive batsman the sports has ever seen.’ ভিভের কথাই বলা হয়েছে।

ভিভ রিচার্ডস বলতেন, “ব্যক্তি আগে, ব্যক্তিত্ব পরে”। নিজের ব্যাটিংয়ের প্রতি কতটা আত্মবিশ্বাস থাকলে এমন করে বলা যায়? আর কেউ কি কখনো পেরেছে বলতে? উদাহরণ পাওয়া যায় না। উদাহরণ পাওয়া যায় না বা আর কেউ তার মতো নন বলেই, তিনি “কিংবদন্তিদের কিংবদন্তি”

শুভ জন্মদিন স্যার আইজাক ভিভিয়ান আলেকজান্ডার রিচার্ডস।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img