মিরপুরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে বৃহস্পতিবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে দর্শকপ্রিয় আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল ওল্ডডিওএইচএস। সাইফউদ্দিনের ব্যাটে-বলে সমান তালের পারফর্মে জিতেছে আবাহনী। আবাহনীর জয় ২২ রানে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এ ম্যাচেও ছিল বৃষ্টির বাগড়া। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা আবাহনীর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নামে বৃষ্টি। ১.১ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে আবাহনীর সংগ্রহ যখন ৫ রান, মিরপুরে হানা দেয় বৃষ্টি। মিনিট ত্রিশেক পর বৃষ্টি থামলে ইনিংসপ্রতি ১৯ ওভার করে খেলার সিদ্ধান্ত হয়। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো আবাহনীর মান বাচিঁয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে দলীয় ২৫ রানে প্রথম ধাক্কা খায় আবাহনী। ২১ বলে ২৩ রান করে আব্দুর রশিদের বলে ওল্ডডিওএইচএস অধিনায়ক মোহাইমিনুল খানের হাতে তালুবন্দি হয়ে ফেরেন নাইম শেখ। এরপর তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত, শান্ত যেন ধারাবাহিকভাবে অধারাবাহিক। ১০ বলে ১১ করে তিনি ফিরেছেন, তাকে ফিরিয়েছেন মোহাইমিনুল। ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার, অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এবং মোসাদ্দেক হোসেন দ্রুত ফিরে গেলে চাঁপে পড়ে আবাহনী। আবাহনীকে উদ্ধার করেন আফিফ হোসেন এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
আফিফ প্রান্ত আগলে রেখে ক্রিজে পড়ে থাকলেও সাইফউদ্দিন ছিলেন সাবলিল। ১৪তম ওভারে ক্রিজে আসা সাইফ যখন আউট হলেন আবাহনী ইনিংস শেষ হতে তখন একবল বাকি, সাইফের নামের পাশে উজ্জ্বল ১৯ বলে ৪০। একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগা আবাহনীকে জয়ের আশা জাগিয়েছে সাইফের ইনিংস, যে ইনিংসে ছিল দুটো চারের পাশাপাশি তিনটা বিশাল ছক্কা। আফিফ অপরাজিত থাকেন ২৯ বলে ২৭ রান করে। নির্ধারিত ১৯ ওভারে আবাহনীর সংগ্রহ ১৩৫।
লক্ষ্য ১৩৬, এই ছোট পুজিকেই বড় করেছেন আবাহনী বোলাররা। পাওয়ারপ্লেতে ওল্ডডিওএইচএস ওপেনারদের খোলসবন্দি রেখেছেন হলুদ-নীল বোলাররা। সেখানেও নেতৃত্ব দিয়েছেন সাইফউদ্দিন। প্রথম স্পেলে ২ ওভার হাত ঘুরিয়ে সাইফ দিয়েছেন মাত্র ৭ রান, সাইফের স্পেল পার্টনার আরাদাত সানিও তাই। নবম ওভারে এসে প্রথম উইকেট পায় আবাহনী, সহিদুল ইসলামের বলে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়েন ওপেনার আনিসুল ইমন। যদিও মুশফিকের অভিব্যাক্তি বলে দেয় উইকেট নয়, অধিনায়কের ভাবনায় শুধুই রান আটকানো। কেননা সহিদুলের সেই অভার থেকে আসে ১৭ রান।
সহিদুল খরুচে হলেও বাকি বোলাররা ছিলে দুর্দান্ত। আগের ম্যাচে দুরন্ত অর্ধশতক করা মাহমুদুল হাসান জয়কে আটকে রাখতে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রেখেছেন সানি-মোসাদ্দেক। আবাহনী বোলারদের তোপে শেষ পাঁচ ওভারে ওল্ডডিওএইচএসের দরকার ছিল ৫৬। ৯ উইকেট হাতে রেখেও সেই রান অতিক্রম করতে না পারার দায়টা ওল্ডডিওএইচএস ব্যাটসম্যানদের।
দিনটা যেন একান্ত নিজের করেই নিতে চাইলেন সাইফউদ্দিন। প্রথম স্পেলে ভালো বোলিং করেও উইকেট মেলেনি, দ্বিতীয় স্পেলে সেই আক্ষেপ রাখেননি। ওপেনার রাকিন আহমেদকে সরাসরি বোল্ড করার পাশাপাশি সে ওভারে রান খরচ করেছেন মাত্র ৩! আরাফাত সানি আর সাইফ যেন চলছিলেন ডানা বেঁধে, দুজনেই তিন ওভারে রান দিয়েছিলেন ১০। সাইফ উইকেট পেলেও তা মেলেনি সানির। সানিও পিছিয়ে থাকবেন কেন? নিজের শেষ ওভার করতে এসে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠালেন ইনফর্ম মাহমুদুল হাসান জয়কে।
শেষেরদিকে রাফসানের রান আক্ষেপ বাড়িয়েছে শুধু। আবাহনীর জয় ২২ রানে । আবাহনীর জয়ের নায়ক ব্যাটে-বলে পারফর্ম করা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ব্যাট হাতে ১৯ বলে ৪০ রানের পর বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান খরচে নেন ১ উইকেট।