ম্যাচে তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৩৬ রান। এমন পরিস্থিতিতে, সবার মাঝে অপেক্ষা ছিল শুধু পরাজয় দেখার। ক্রিকেটারদের মত মাঠ ও মাঠের বাইরে দর্শকদের চোখে-মুখে ছিল হতাশা। কিন্তু ক্রিকেট যে অনিশ্চিয়তার খেলা। কে জানতো মেহেদী মিরাজ বুনবেন জয়ের মালা! শেষ পর্যন্ত নাটকীয় ম্যাচে, মিরাজ রোমাঞ্চে এক উইকেটে ভারতের বিপক্ষে জয় পায় বাংলাদেশ।

এর আগে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। শুরুতে বেশ ধীরে-সুস্থেই ব্যাটিং করেন ভারতীয় দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শিখর ধাওয়ান। ১৭ বলে মাত্র ৭ রান করা ধাওয়ানকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী মিরাজ। পাওয়ারপ্লেতে ভারত তোলে ১ উইকেটে ৪৮ রান। এরপর ১১তম ওভারে রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলিকে আউট করে ভারত শিবিরে বড় ধাক্কা দেন সাকিব আল হাসান।

দলীয় ৪৯ রানেই ৩ উইকেট হারায় ভারত। রোহিত ৩১ বলে ২৭ এবং কোহলি ১৫ বলে করেন ৯ রান। ভারতীয় ব্যাটারদের ব্যর্থতার ভিড়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি তুলে নেন লোকেশ রাহুল, ৭০ বলে করেন ৭৩ রান। শেষ পর্যন্ত ৪১.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ভারত তোলে মাত্র ১৮৬ রান। সাকিব আল হাসান ১০ ওভারে মাত্র ৩৬ রান খরচায় শিকার করেন ৫ উইকেট। ভারত শিবিরে ঝড় তোলা আরেক টাইগার বোলার ইবাদত হোসেন, ৮.২ ওভারে ৪৭ রান ব্যয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট ।

জবাবে শুরুতেই টাইগার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত করেন হতাশ। বিনা রানেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২৬ রানের মাথায় এনামুল হক বিজয়কে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ৬৩ বলে ৪১ রান করে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক লিটন দাশ। লিটনের পর বাইশ গজে বোলিংয়ের মত ব্যাটিংয়েও আশার আলো দেখান সাকিব আল হাসান। ৩৮ বল খেলে ২৯ রানেই আটকে যায় সাকিবের ইনিংস। ম্যাচ থেকে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

দলীয় ১৩৬ রানে ৯ উইকেটের পতন হলে, সবাই তখন ধরেই নিয়েছিল ভারতের বিপক্ষে টাইগারদের আরেকটি পরাজয়। তবে তখনো যে মিরাজ শো বাকি তা জানতো না কেউই। বাইশ গজে থাকা এ অলরাউন্ডার ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন টাইগারদের আশার ফুল। তার ব্যাট থেকে আসা শুরু করে একের পর এক বাউন্ডারি। কিন্তু তা হয়তো শুধু হারের ব্যবধানটাই কমছে, হয়তো এমনটাই ছিল দর্শকদের ভাবনা। কিন্তু মিরাজ ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলে আনতে একাই নেন দায়িত্ব।