২৭ জুলাই ২০২৪, শনিবার

যেন রিয়ালের জন্য খেললো বার্সেলোনা-আতলেতিকো

- Advertisement -

স্প্যানিশ লিগের (লা লিগা) শিরোপার লড়াই যেন দুলছে পেন্ডূলামের মতো। অনেকবছর পর লা লিগার দর্শকরা দেখতে  পাচ্ছেন  ‘ওপেন প্লেয়িং ফিল্ড’। শীর্ষস্থানে থাকা আতলেতিকোকে হারাতে পারলেই  চলে যাবে টেবিল টপে, এই সমীকরণ মাথায় নিয়েই নু-ক্যাম্পে দিয়েগো সিমিওনের দলকে আতিথ্য দেয়  বার্সেলোনা। দুদলের এ লড়াই অমিমাংসীত থাকলে লাভ রিয়াল মাদ্রিদের। নু-ক্যাম্পে দুদল যেভাবে খেলেছে তাতে মনে হতেই পারে রিয়ালের জন্যই ড্র করল দুইদল।

চলতি মৌসুমে্র শুরুতেই অর্ধযুগের বার্সা ক্যারিয়ার শেষ করে আতলেতিকো মাদ্রিদে যোগদান করেন লুইস সুয়ারেজ। বার্সা ছাড়ার পর এটাই উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারের প্রথম নু-ক্যাম্প দর্শন। প্রিয় বন্ধু সুয়ারেজকে কাছে পেয়ে আপ্লূত ছিলেন লিওনেল মেসিও। নু-ক্যাম্পে দিয়েগো সিমিওনে তার দলকে খেলান তার ট্রেডমার্ক রক্ষনশীল পরিকল্পনাতেই। রক্ষন গুছিয়ে আক্রমনে যেতে তিনি ব্যবহার করেন ৪-৪-২  ফর্মেশন। অন্যদিকে বার্সার কোচ রোনাল্ড কুম্যান পছন্দ করেন উইং নির্ভর ফুটবল খেলতে। এই ডাচম্যান আতলেতিকো মহারনে বেছে নিলেন  তার প্রিয় ৩-১-৪-২ ফর্মেশন।

হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর সাথে সকাল-বিকেল বেলা...ছবিঃ ইন্টারনেট
হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর সাথে সকাল-বিকেল বেলা…ছবিঃ ইন্টারনেট

কিক অফের বাঁশি বাজার পর ম্যাচের মাত্র ১৬ সেকেন্ডেই যখন ফাউলের শিকার হন বার্সা অধিনায়ক মেসি, তখনই কার্যত টের পাওয়া গেছে ম্যাচের উত্তেজনা। ম্যাচের ৭মিনিটের মধ্যে মেসিকে যখন তিনবার ফাউল করেন আতলেতিকো খেলোয়াড়রা, বার্সার মাঠে রোদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায়  সিমিওনের পরিকল্পনা কি ছিল তা হয়তো আঁচ করাই যায়। যেন শিষ্যদের বলছেন, ‘আগে মেসিকে বোতলবন্দি করো, তারপর  অ্যাটাকে যাও’।

ম্যাচের ১৯ মিনিটে ম্যাচের প্রথম সত্যিকারের সুযোগ আসে আতলেতিকোর সামনে, মাঠের বাঁ পাশ থেকে হারমোসার বাড়ানো বল অ্যাঞ্জেল কোরেয়ার দিশা খুঁজে পাওয়ার আগেই কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন লেংলেট। ২৮ মিনিটে সুযোগ পায় বার্সাও, কিন্ত আতোঁয়া গ্রিজম্যানের বাঁ পায়ের দুর্বল শট সহজেই তালুবন্দি করেন আতলেতিকো মাদ্রিদ গোলরক্ষক ইয়ান অবলাক। মিনিট দুয়েক পরেই বড়সর ধাক্কা খায় বার্সেলোনা, কাতালান ক্লাবটির মাঝমাঠের স্তম্ভ সার্জিও বুসকেটস চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। নু-ক্যাম্পে প্রত্যাবর্তন রাঁঙাতে পারতেন সুয়ারেজ, তার কোণাকোণি শট প্রতিহত করেন বার্সা গোলকিপার আন্দ্রে টের স্টেগান ।

প্রথমার্ধের বাকিটা সময় শুধুই সিমিওনে শিষ্যদের, আক্রমনের পর আক্রমনে তটস্থ রাখেন বার্সা ডিফেন্ডারদের। বল দখল আর পাসিং এক্যুরেসির মতো প্রথমার্ধে সবকিছুতেই ছিল আতলেতিকোর আধিপত্য, শুধু গোলটাই আসেনি । উল্টো ৪০ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেন লিওনেল মেসি, তার বাঁ পায়ের নান্দনিক শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান অবলাক। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে আটলেতিকো মিডফিল্ডার লরেন্তে যে সুযোগ মিস করলেন, সেখানে একমাত্র আফসোস ছাড়া আর কিছুই করার নেই আতলেতিকোর আর্জেন্টাইন কোচের। প্রথমার্ধ শেষে যখন দুইদল বিরতিতে যায়, দুদলের কেউই খুলতে পারেননি গোলমুখ।

মানসিকভাবে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধের মতোই দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হয় মেসিকে ফাউল করে। গুণীজনেরা বলেন দুর্বলতাকেই নাকি শক্তিতে পরিণত করতে হয়। দ্বিতীয়ার্ধে  সেটাই করার চেষ্টা করে বার্সেলোনা। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে মুহুর্মুহু আক্রমন সাজায় কিউলরা। ৬২ মিনিটে  মরিবা যে সুযোগটা মিস করলেন তাতে আফসোস হতেই পারে বার্সা বসের। দুদলের স্ট্রাইকাররা  খেই হারিয়ে ফেলছিলেন গোলবারের কাছে গিয়েই। সুয়ারেজদের সামনে চীনের প্রাচীর যদি হন মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান, তাহলে মেসিদের রাতের ঘুম হারাম করার জন্য যথেষ্ট ইয়ান অবলাক।

৭০ মিনিটে জালের দেখা পান রোনাল্ড আরাহো, জর্দি আলবার ক্রসে মাথা ছুঁয়ে জালের দিশা পেলেও অফ সাইডের ফাঁদে পড়ে বাতিল হয় সেই গোল।  ৭৫ মিনিটে আরাধ্য গোলের নেশায় জোড়া পরিবর্তন করেন ক্যুমান। প্রথমার্ধ যদি হয় আতলেতিকোর, দ্বিতীয়ার্ধ তবে বার্সেলোনার। ফার্স্ট হাফে যেমন শতচেষ্টা করেও কেউ খুলতে পারেনি গোল গেড়ো, দ্বিতীয়ার্ধেও তাই। আক্রমনের পর আক্রমন হয়েছে কিন্ত গোল আসেনি, যেন মনে হতেই পারে দুদলই খেলছে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য। তা না হলে ম্যাচ শেষের মিনিট দশেক আগে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে বল পেয়েও উসমান দেম্বেলের হেড কীভাবে ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়?  কীভাবে ডি-বক্সের একদম সামনে ফ্রি-কিক পেয়েও মেসির শট ঠিকানা খুঁজে পায় না?

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img