স্টেডিয়ামের দেয়াল বেয়ে ঝুলছে অনেকগুলো ব্যানার, যেখানে শোভা পাচ্ছে নাজমুল হাসান পাপন, খালেদ মাহমুদ সুজন, খালেদ মাসুদ পাইলটদের মতো পরিচিত মুখ ছাড়াও আরো অনেকের ছবি। প্রতিটি ছবির নিচে নিজেদের পরিচয় দিয়ে ‘ভোট’ চাইছেন তারা, ভোট পেলে কি কি করবেন সেই প্রতিশ্রুতিও লেখা রয়েছে নানান ঢংয়ে। একপাশে বাঁশ-দড়ি দিয়ে অস্থায়ী কিছু একটা তৈরি করছেন শ্রমিকরা। সব মিলিয়ে হঠাৎ মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে যদি আপনি এখন যান, মনে হতেই পারে ‘এ কোথায় এলাম?’
তবে এটিই এই মুহুর্তে হোম অব ক্রিকেটের বাস্তবতা। কেবল রাত পেরিয়ে সকাল হবারই অপেক্ষা; বুধবার অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন। আগামী চার বছরের জন্য কারা নিতে চলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের দায়িত্বভার- এটা নির্ধারিত হবে এই দিনটিতেই। তাই তো মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের আনাচে কানাচে এখন তাই শুধুই নির্বাচনের শেষমুহুর্তের প্রস্তুতির দৃশ্য ও শব্দই দেখা ও শোনা যাচ্ছে। ক্রিকেটারদের বদলে ‘খেলোয়াড়’ এখন বিভিন্ন ক্যাটাগরীর প্রার্থীগণ, ক্রিকেট পিচের বদলে খেলা হবে অস্থায়ী ‘বুথ’সমূহে, ব্যাট বলের লড়াইয়ের বদলে মিরপুরে হবে ‘ভোটের’ লড়াই।
সংবিধান অনুযায়ী তিন ক্যাটাগরি থেকে মোট পরিচালক পদ ২৫টি। যার ৭ জন ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন, ২ জন হয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোটায়। ১২৭ জন কাউন্সিলরের ভোটে বাকি ১৬ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন বুধবার। অনেক কাউন্সিলরই সশরীরে ভোট দিতে আসতে পারবেন না, তাদের জন্য রয়েছে পোস্টাল ব্যালট ও ই ব্যালটের ব্যবস্থা।
নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণের জন্য এসেছিলেন প্রিজাইডিং অফিসার এম ফরহাদ হুসেইন। গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি দিয়েছেন নির্বাচন সংক্রান্ত নানান প্রশ্নের উত্তর। বলেছেন, নির্বাচনের জন্য প্রায় প্রস্তুত হোম অব ক্রিকেট।
“প্রস্তুতি দেখার জন্যই আমি এসেছি। এখন বুথ রেডি হচ্ছে; ব্যালট তো সব আগেই রেডি করা আছে। যারা পোস্টাল ও ই ব্যালটে ভোট দিতে আবেদন করেছিলেন তাদের পোস্টাল ও ই ব্যালট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো কাল বিকেল পাঁচটায় নির্বাচন শেষ হলে আমরা চেক করবো। সব মিলিয়ে বলা যায় প্রস্তুতি সম্পন্ন।”
নির্বাচনে মোট প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল ৩২ জন। তবে শেষ মুহুর্তে ক্যাটাগরি-২ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন শওকত আজিজ রাসেল। তবে নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের পর নাম প্রত্যাহার করায় তাঁর নাম ব্যালট লিস্টে থেকে যাবে।
ভোট গ্রহণ করা হবে দুটি বুথে। চলবে ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। ৫টার পর ভোট গণনার সময়ই খোলা হবে পোস্টাল ব্যালট ও ই ভোটগুলো। মোট ৫৭ জন কাউন্সিলর এই দুই পন্থায় ভোট দেবেন।
বেসরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হবে বুধবারই, সরকারিভাবে ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হবে পরেরদিন।