পা হড়কালেই শিরোপার আশা শেষ হয়ে যেতে পারে, মাথায় এমন সমীকরণে ভায়োদালিদের মুখোমুখি আতলেতিকো মাদ্রিদ। আর ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালকে আতিথ্য দেওয়ার সময় নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হোঁচট খাবার প্রার্থনায় মশগুল হয়তো অল হোয়াইটরা। নিজেদের হাতে যা ছিল তার সবটাই করেছে দুদল। পিছিয়ে পড়ে মাদ্রিদের দুই পরাশক্তি জিতেছে ২-১ গোলের ব্যবধানে। স্প্যানিশ লিগ লা লিগার চলতি মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন আতলেতিকো। এ ম্যাচের দর্শকরা একসঙ্গে দেখেছেন মুদ্রার দুই পিঠ। যে ম্যাচে আতলেতিকো করেছে জয়ৎসব, সেখানেই ঘরের মাঠে ভায়োদালিদের খেলোয়াড়দের সঙ্গী হয়েছে কান্না। রেলিগেশনের কবলে পড়ে আগামী মৌসুমে আর লা লিগা খেলা হচ্ছে না তাদের।
শিরোপা নিষ্পত্তির লড়াইয়ে যেটা হলো সেটা যেন এবারের লা লিগার পুরো সিজনের দৃশ্যপট। শিরোপা যত সামনে আসে, তত হোঁচট খায় শিরোপা প্রত্যাশীরা। শনিবার রাতেও তাই, যেখানে জয়ে মিলবে শিরোপা সেখানে শুরুতেই গোল খেয়ে বসে আতলেতিকো। ম্যাচের ১৮ মিনিটে ভায়োদালিদের ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়ে দিয়েগো সিমিওনে শিষ্যরা। আতলেতিকোর পিছিয়ে পড়ার সুযোগ যেখানে নেবে রিয়াল, সেখানে রিয়াল যা করল তা যেন পুরো মৌসুমের চিত্র। ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে বিশ মিনিটেই গোল হজম করে বসে জিদান এন্ড কোং। ভায়োদালিদের গোলস্কোরার অস্ক্যার প্ল্যানো আর রিয়ালের পথের কাঁটা পিনো। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় দুইদল গুনছে খালি ব্যর্থতার নামতা।
দ্বিতীয়ার্ধের আতলেতিকো ছিল বড্ড চেনা, মৌসুমের সেই গোছানো দল । ফলাফল আসতে সময় লাগেনি, ৫৭ মিনিটে গোল, সমতা। ইংরেজিতে একটা কথা আছে, ওয়ান কামস আফটার এনাদার। সে কথাই যেন মনে করিয়ে দিল সিমিওনে শিষ্যরা, কোরেয়ার গোলের মিনিট দশেক পরে সুয়ারেজের আঘাত। বাঁ পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত ফিনিশে ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিডে আতলেতিকো মাদ্রিদ। সেই লিড বাকিটা সময় ধরে রেখে দলের জয় নিশ্চিত করে আতলেতিকো।
দুদলের ম্যাচে রিয়াল আর আতলেতিকো ছিল যেন একই মায়ের দুই ভাইয়ের মতো। কেনইবা হবে না বলুন? আতলেতিকো গোল খাওয়ার মিনিট দুয়েক পর খেলো রিয়াল। আতলেতিকো প্রথমবার জালের দিশা যখন খুঁজে পেলেন, প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে রিয়ালও খুঁজে পেয়েছিল জালের ঠিকানা। কিন্ত বিঁধিবাম! করিম বেনজেমার গোল অফসাইডের কবলে পড়ে বাতিল হলে রাজ্যের নিরবতা নেমে আসে অল হোয়াইট শিবিরে। বাকিটা সময় চেষ্টা চালাতে থাকে রিয়াল, ম্যাচের বাকি যখন তিন মিনিট তখন হালে পানি পায় ক্রুসরা। বেনজেমার ৮৭ মিনিটের গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। আতলেতিকোর মতো এক গোলের পর দ্রুতই দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়েছে রিয়াল। নির্ধারিত ৯০ মিনিট অতিক্রমের পর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ভিয়ারিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটুকু ঠুকে দেন লুকা মদ্রিচ।
মৌসুমের শুরুতেই বার্সা থেকে আতলেতিকোতে পারি জমান লুইস সুয়ারেজ। বলা, উরুগুইয়ান এই স্ট্রাইকার ছিল সাত বছর পর আতলেতিকো মাদ্রিদের লিগ শিরোপা জয়ের অন্যতম চরিত্র। লাল-সাদাদের জার্সিতে চলতি মৌসুমে করেছেন ২০ গোল। সঙ্গে সউল, কোরাস্কা আর কোরেয়ার মতো প্লেমেকাররা দিয়েছেন যোগ্য সঙ্গ। ফলাফল, শিরোপা জয়, অভিনন্দন আতলেতিকো।