আগের ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যামফার গড়েছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে ডাবল হ্যাটট্রিকের ইতিহাস। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে বিশ্বকাপে আরেকটি হ্যাটট্রিক দেখা থেকে অল্পের জন্য বঞ্চিত হলো ক্রিকেট বিশ্ব। দুর্ভাগ্য কাবুয়া মোরেয়ার; স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এই বাঁহাতি পেসারের করা শেষ ওভারের শেষ তিন বলে তিন উইকেট পড়েছে, তবে মাইকেল লিস্কের উইকেটটা গেছে রানআউটে। যদিও এই বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি মন খারাপ করার কারণ নেই মোরেয়ার কাছে। কারণ শেষ ওভারে ওই তিনটি উইকেটের পাশাপাশি আরেকটি উইকেট- অর্থাৎ মোট ৪ উইকেট নিয়ে স্কটল্যান্ডের রান ১৬৫ এর ‘ধরাছোঁয়া যায় এমন’ রানে বেঁধে ফেলার কাজটি তো করেছেন তিনিই।
মন খারাপ যদি করতেই হয় তাহলে কাবুয়া মোরেয়ার, তবে তিনি এই কারণে করবেন যে, তাঁর অমন বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে সতীর্থ নরম্যান ভানুয়ার একার লড়াইয়ে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ ছিলনা। নয়তো শুরুর ব্যাটিং ধ্বসের পরও তো জয়ের সম্ভাবনা জেগেছিলো পাপুয়া নিউগিনির, চেষ্টা করেছিলেন ভানুয়া, আর একজন দুজন যদি ব্যাট হাতে তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যেতেন তাহলে তো এতো কাছে গিয়ে হারতে হয়না পাপুয়া নিউগিনিকে।
যদিও অপরদিকে স্কটল্যান্ড রীতিমতো হাঁফ ছেড়েই বেঁচেছে। পাপুয়া নিউগিনিকে ১৭ রানে হারিয়ে প্রথম রাউন্ডে টানা দুটি জয় তুলে নিলো তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে খেলার জন্য ‘বি’ গ্রুপ থেকে সবচেয়ে ভালো সম্ভাবনা এখন স্কটল্যান্ডেরই আছে।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে ফেলে স্কটল্যান্ড। এরপর রিচি বেরিংটন ও ম্যাথিউ ক্রস মিলে শুরু করেন ইনিংস মেরামতের কাজ। তৃতীয় উইকেটে ৯২ রানের জুটি গড়ে আউট হন ক্রস; খেলেছেন ৩৬ বলে ৪৫ রানের ইনিংস। বেরিংটন এরপরও চালিয়ে যেতে থাকেন, ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে করেছেন ৪৯ বলে ৭০ রান।
১৯ ওভার শেষে ১৫৫/৫ ছিল স্কটিশদের স্কোর, সেখান থেকে শেষ ওভারে রান যতটা সম্ভব বড় করারই লক্ষ্যই হয়তো ছিল স্কটল্যান্ডের। তবে কাবুয়া মোরেয়ার ওই ওভারে ওই ঝড়ের পরও যে দশরান তুলতে পেরেছে স্কটল্যান্ড সেটিই বাঁচোয়া। ৩১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পাপুয়া নিউগিনির সেরা বোলার কাবুয়া মোরেয়া, ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন চ্যাড সপার।
জয়ের জন্য ঐ ১৬৫ রানই অবশ্য যথেষ্ট পুঁজি হয়ে দেখা দেয় স্কটল্যান্ডের জন্য। কারণ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই একের পর এক উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাকে পাপুয়া নিউগিনি। দলীয় ৬৭ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে নিউগিনির হারটা যখন প্রায় সময়ের ব্যাপার তখন অবশ্য নাটক একটু জমিয়ে দিয়েছিলেন নরম্যান ভানুয়া। তাঁর ৩৭ বলে ৪৭ রানের ক্যামিওর কল্যাণে এক অসম্ভব জয়ের স্বপ্নই দেখছিল পাপুয়া নিউগিনি। তবে জশ ডেভির বলে উইকেটকিপার ক্রসের ক্যাচে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাসমান পাড়ের দ্বীপদেশটির। লেজের দিকে কিপলিন দোরিগা-চ্যাড সপাররা চেষ্টা করলেও শুধু ব্যবধানই কমেছে। ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার জশ ডেভি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
স্কটল্যান্ড- ২০ ওভার শেষে ১৬৫/৯ (বেরিংটন ৭০, ক্রস ৪৫; মোরেয়া ৪/৩১, সপার ৩/২৪ )
পাপুয়া নিউগিনি- ১৯.৩ ওভারে ১৪৮/১০ (ভানুয়া ৪৭, বাউ ২৪, দোরিগা ১৮; ডেভি ৪/১৮)