হার্শাল প্যাটেলের হ্যাট্রিক ও স্পিনারদের ঘূর্ণি-জাদুতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিং লাইনআপ চুরমার করে ৫৪ রানের বড় জয় তুলে নিয়েছে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। ব্যাঙ্গালুরুর ১৬৫ রানের জবাবে সবক’টি উইকেট খুইয়ে মুম্বাই করতে পেরেছে মাত্র ১১১। এই নিয়ে আইপিএলের দ্বিতীয় কিস্তি শুরু হওয়ার পর থেকে টানা তিন ম্যাচ হারলো রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
A memorable night in Dubai! ???
Let’s take this momentum ahead and look forward to Wednesday. ??#PlayBold #WeAreChallengers #ನಮ್ಮRCB #IPL2021 #RCBvMI pic.twitter.com/1U1m3ItBqZ
— Royal Challengers Bangalore (@RCBTweets) September 26, 2021
টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামে ভিরাট কোহলির ব্যাঙ্গালুরু। ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন মুম্বাইয়ের জাসপ্রিত বুমরাহ। টানা তিন বলে নাচিয়ে চতুর্থ বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ব্যাঙ্গালুরুর ওপেনার দেবদূত পাড়িকলকে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরান এই পেসার। এরপর ভিরাট কোহলি ও শ্রীকর ভারত এগিয়ে নিতে থাকেন ব্যাঙ্গালুরুর রানের চাকা; দুজনে গড়েন ৬৮ রানের জুটি। ভারত ৩২ রানে আউট হওয়ার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সাথেও ৫১ রানের জুটি গড়েন কোহলি। আগের ম্যাচের মত এই ম্যাচেও পঞ্চাশের দেখা পেয়েছেন ব্যাঙ্গালুরু অধিনায়ক। ৪২ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ রান করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। এই ইনিংসেই বিশ্বের ৫ম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়ন্টিতে দশ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কোহলি।
কোহলির আউটের পরই যেন ‘স্বরূপে’ দেখা দেন ম্যাক্সওয়েল। ২৭ বলে ৩৪ ছিলেন, সেখান থেকে আর মাত্র ৬ বল খরচ করেই স্পর্শ করেন ফিফটি। এবি ডি ডিভিলিয়ার্সও নামার পর সময় নষ্ট না করে শুরু করেন আক্রমণ। এই দুজনের উপর ভর করে যখন রানের পাহাড়ে চড়ার আশা করছে ব্যাঙ্গালুরু; ঠিক তখনই ১৯তম ওভারে আবারো জাসপ্রিত বুমরাহর জোড়া আঘাত। ওভারের ৪র্থ বলে লং অনে ট্রেন্ট বোল্টকে ক্যাচ দিয়ে ৫৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। পরের বলেই বুমরাহর দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হন ডিভিলিয়ার্স। শেষ ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট দেন মাত্র ৩ রান; শিকার করেন শাহবাজ আহমেদের উইকেট। ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৫। জাসপ্রিত বুমরাহ ৩৬ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেন মুম্বাইয়ের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা আর কুইন্টন ডি কক। ৫ ওভারেই ৫০ রান তুলে ফেলে তাঁরা। দলীয় ৫৭ রানে ২৩ বলে ২৪ রান করে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে ডিপ মিডউইকেটে ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ডি কক। খানিক্ষণ পর ম্যাক্সওয়েলের শিকার হন রোহিত; তার আগে খেলে যান ২৮ বলে ৪৩ রানের ইনিংস।
এই দুজনের বিদায়ের পর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটিং তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়ে। বড় ইনিংস তো দূরে থাক, কোন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রানই ছুঁতে পারেননি। ১৭তম ওভারে পরপর তিন বলে হার্দিক পান্ডিয়া, কিরন পোলার্ড ও রাহুল চাহারকে আউট করে হার্শাল প্যাটেল শেষ করে দেন মুম্বাইয়ের লড়াইয়ের সামান্যতম সম্ভাবনাটুকুও। ৩.১ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে হ্যাট্রিকসহ ৪ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। সব মিলিয়ে ২৩ উইকেট নিয়ে এই মৌসুমে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির ‘পার্পল ক্যাপ’টা মাথায় আরো পাকাপোক্ত করে বসালেন হার্শাল; যুজবেন্দ্র চাহালও নিয়েছেন ১১ রানে ৩ উইকেট। ১৮.১ ওভারে ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় মুম্বাই। ব্যাট হাতে বিধ্বংসী ফিফটি ও বল হাতে ২ উইকেট নেওয়ার সুবাদে ম্যাচসেরা হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।