ফিফটি তুলেছিলেন ১০৮ বলে; যা তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় মন্থরতম। ৯০ পেরোতে নিয়েছেন আর মাত্র ৫৬টি বল। তবে তাঁর মতো ব্যাটারের জন্য তো এটাও বলতে গেলে ‘ধীরে চলো’ নীতিই।
তাই সেঞ্চুরিটি যেন করে ফেলতে চাইলেন পরের ওভারেই। বেন স্টোকস ক্রমাগত শর্টবল করে চলেছেন, সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইলেন। প্রথম বলে সপাটে পুল করে চার, পরের বলটা আবারো শর্ট, স্কয়ার কাট করে ত্রিশগজি বৃত্তের ফিল্ডারদের মাথার ওপর দিয়ে পাঠাতে চাইলেন, এবং সেখানেই ভুলটা করলেন। আগের ম্যাচে ৯৪ করেছিলেন, এই ম্যাচে মাত্র ১ রান বেশি করলেন। দুই টেস্টে দুবার সেঞ্চুইর বঞ্চিত হলেন ডেভিড ওয়ার্নার।
ওয়ার্নার তো ৯৫ রানে আউট হয়ে সেঞ্চুরি করতে পারলেন না, তবে মারনাস লাবুশেন সেই ৯৫ তে যাওয়ার পরই মনে হয় যেন সেঞ্চুরি আর করতে ‘চাইলেনই না’। ২৭৫ বলে ৯৫* করেই দিন (নাকি রাত?) শেষ করে ফিরলেন। শেষ ১০ ওভার একেবারেই খোলসে ঢুকে ছিলেন লাবুশেন ও তার সঙ্গী স্টিভ স্মিথ।
মজার ব্যাপার হলো ঠিক ৯৫ রানে লাবুশেনেরও একটি ক্যাচ উঠেছিলো, কিন্তু সহজ ক্যাচটি ছেড়ে দেন জস বাটলার। অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরে দিন শুরু করা বাটলার শেষ করলেন লোপ্পা একটি ক্যাচ ছেড়ে। অস্ট্রেলিয়া শেষ করলো ২২১/২ এ।
এই ছিলো অ্যাডিলেডের দিবারাত্রির টেস্টের প্রথম দিনের খন্ড খন্ড গল্প।
Close of play, day one: Australia 221-2.
Marnus Labuschagne 95*
Steve Smith 18*The day belongs to Australia with the hosts in a strong position in Adelaide.
Follow the #Ashes live on @BBCSounds#bbcricket
— Test Match Special (@bbctms) December 16, 2021
গোলাপি বলে এমনিই বাড়তি বাউন্স মেলে। তার ওপর ইংলিশ পেসাররা টানা শর্টবল ও বাউন্সারের মেলা বসিয়েছিলেন শেষ দুই সেশনে। ফ্লাডলাইটের আলোতেও আনতে পারেননি বোলিংয়ে কোন ধার। অপরিকল্পিত বোলিংয়ের খেসারত ইংলিশদের দিতে হয়েছে পাইপাই করে। সারাদিনে অজিদের মাত্র দুটো উইকেট ফেলতে পারা গেছে।
দিনের শুরুটা নিজেদের সুইং বোলিং দিয়ে কাঁপিয়ে দিচ্ছিলেন বহুদিন পর টেস্টে একসাথে ফেরা জেমস অ্যান্ডারসন-স্টুয়ার্ট ব্রড জুটি। ৮ম ওভারে মাত্র ৩ রানে মার্কাস হ্যারিসকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেকথ্রুটি এনে দেন ব্রড; জস বাটলার ধরেন অসাধারণ একটি ক্যাচ। তার কিছুক্ষণ আগেই দুবার ব্রডের বলেই আউট হতে হতে বেঁচেছিলেন হ্যারিস।
তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ডেভিড ওয়ার্নার ও মারনাস লাবুশেনের প্রতিরোধের সামনে ধীরে ধীরে ইংলিশ পেসারদের দাপট মিলিয়ে যেতে থাকে। নিজের প্রচলিত মারকুটে ব্যাটিংয়ের চরিত্র ভেঙ্গে ওয়ার্নার ছিলেন অনেকটাই খোলসবন্দী। পঞ্চাশ তুলেছেন ১০৮ বলে যা তাঁর ক্যারিয়ারের তৃতীয় মন্থরতম ফিফটি। লাবুশেন ও ওয়ার্নার গড়েন ১৭২ রানের জুটি। রাতের সেশনে একটু দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া, তাতেই বাজে শটে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন ওয়ার্নার। এরপর অবশ্য লাবুশেন ও স্মিথ দেখান জমাটবদ্ধ প্রতিরোধ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ অস্ট্রেলিয়া- ৮৯ ওভারে ২২১/২ (ওয়ার্নার ৯৫, লাবুশেন ৯৫*; স্টুয়ার্ট ব্রড ১/৩৪)