১ মে ২০২৪, বুধবার

ম্যারাডোনার জন্য আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় দেখতে চান মাশরাফী

- Advertisement -

লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ফাইনালে। আর্জেন্টিনা ভক্ত এবং টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা একটু বেশিই খুশি হওয়ারই কথা। ম্যারাডোনা ভক্ত মাশরাফীও ভাবেননি প্রিয় দল পৌঁছাবে ফাইনালে। এজন্যই ফাইনালের আগে খানিকটা আবেগাপ্লুত ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক’। বৃহস্পতিবার দিয়েছেন বড় এক স্ট্যাটাস। সেখানে মাশরাফী লেখেন,

”স্বপ্নের ফাইনাল। আট বছরে দুই বার। আট বছর আগে রোজা চলছিলো, সেহেরীর ঠিক পরেই গোৎজের গোলে হেরে রানারআপ হয়েছিলো আর্জেন্টিনা। তখন মনে হয়েছিলো আর সম্ভব না,কারণ বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠা চারটে খানিক বিষয় না। সেখানে শুধু ভালো খেললেই হয় না,অনেক সমীকরন সাথে ভাগ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।১৮ তে রাউন্ড অফ সিক্সটিনেই বাদ। সাত গোলের খেলায় তিনটা দিয়েও টিকে থাকতে পারলো না। এবার সবাই যখন বলছিলো টানা ৩৬ম্যাচ অপরাজিত; আসলে মন সাড়া দেয়নি। কারণ বিশ্বকাপ অন্য জিনিস। এখানে ফাইনালে যেতে রাউন্ড সিক্সন্টিন থেকে ফাইনালে পৌছানোর ধাপই তিনটি, যেখানে নক আউট পদ্ধতি। এর আগে তো গ্রুপ রাউন্ড আছেই। আশঙ্কা সত্য হয়ে প্রথম ম্যাচই সৌদির কাছে হার, পরে সব ম্যাচই অলমোস্ট ফাইনাল। সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়ে আর্জেন্টিনা ফাইনাল খেলছে, এটা ভাবাই যায়না।”

মেসিতে মুগ্ধ ম্যাশ

মাশরাফীর কথা পরিস্কার মেসিদের এই পথচলা তার কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকেছে। সাথে নতুন করে আরো একবার মেসিতে মুগ্ধ সাবেক অধিনায়ক।

”আর্জেন্টিনা রোড টু ফাইনালের সব ম্যাচই দেখেছি। প্রথম বারের মতো মেসিকে যে ভাবে বিশ্বকাপে দেখতে চেয়েছি সেটা দেখে আরও ভালো লেগেছে। এখনো পর্যন্ত তিনটা অ্যাসিস্ট সহ পাঁচটা গোল। এমবাপ্পের সাথে একই অবস্থানে। যদি দুজনের কেউ ফাইনালে গোল না করে,অ্যাসিস্ট এর কারনে গোল্ডেন বুট মেসিই পাবে।আর পেনাল্টি নিয়ে যতো কথা,আমার তো মনে হয় মেসির পেনাল্টি মিস নিয়েই এ যাবৎকাল সবচেয়ে বেশি কথা হয়েছে। নিন্দুক হতে তো জ্ঞানী হতে হয়না, হতে হয় কট্টরপন্থী। আর্জেন্টিনার এই দলটার সবচেয়ে ভালো দিক হলো, দলের সবাই জানে মেসি সেরা কিন্তু মেসির সেরাটার জন্য কেউ বসে থাকছেনা।”

মেসির পাশাপাশি দলের তরুণ ফুটবলাররাও মাশরাফীর চোখে অসাধারণ। প্রশংসা করেছেন অনেকেরই, ”হিগুয়েন, অ্যাগুয়েরো ঘুরে শেষমেশ একজন স্ট্রাইকার(আলভারেজ) পেলো যে আসলে দরকারের সময় গোল করেছে। ডি পল তো মেসির না শুধু, পুরো দলেরই ভ্যানগার্ড। প্রথম ম্যাচ বাদে রোমেরো, ওটামেন্ডি ঠিকঠাক নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে। আর ২১ বছর বয়সী ফার্নান্দেজ তো এবার বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের অন্যতম দাবিদার। গোলবারে মার্টিনেজ দারুণ। আর সবাই ও খুব খারাপ করেনি।”

সবার ক্রেডিট দিবেন আর মাস্টারমাইন্ড লিওনেল স্কালোনি প্রাপ্ত ক্রেডিটটা দিতে ভুলেননি।

”এতো কিছুর পর একজনের কথা না বললেই না, সে হলো লিওনেল স্কালোনি। বয়স কম কিন্তু দারুণ একজন সাহসী মানুষ। প্রথম ম্যাচের পর মূল দলের বাহিরে গিয়ে এভাবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এতো বড় টুর্নামেন্টে কিছু তরুনদের উপর আস্থা রাখা এবং তাদের থেকে সেরাটা বের করে আনা এক কথায় অসাধারণ। ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাট, যা শুরুতে মনে হয়েছে এতো চেঞ্জ করছে কন? পরে আসলেই আর্জেন্টিনার খেলোয়াররা দারুণ ভাবে সেটার সাথে মানিয়ে পারর্ফম করে ম্যাচ জিতিয়ে এনে স্কালোনি আরও সাহসী করে তুলছে।”

 

মাশরাফীর বিশ্বাস এবার হতাশ করবে না প্রিয় দল।

”একটা ম্যাচ বাকি, সব ঠিকঠাক ভাবে মিললে হয়তো কাঙ্খিত জায়গায় পৌঁছাবে, আর না হলে আরও একবার ফাইনালে হেরে রানারআপ। তবে তাতে আর্জেন্টিনার এই বীরত্বে বিন্দু মাত্র ভাটা পড়বে না। ফ্রান্স অলরেডি দেখিয়েছে তারা কেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।

শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নিজের প্রিয় ফুটবলার এবং যার প্রতি আর্জেন্টিনাকে ভালোবাসা, তিনি প্রয়াত দিয়াগো ম্যারাডোনাকে। ”একজন আর্জেন্টিনা দলের চরম ভক্ত হিসাবে চাই এ বিশ্বকাপ জিতুক, সবার চাওয়া হয়তো মেসির জন্য, আমারও খুব ভিন্ন না। তবে তার আগে জিততে চাই শুধুই আর্জেন্টিনার জন্য যে দলকে ভালোবেসেছি স্রেফ আর স্রেফ একজনকে দেখে—

দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা
গুরু ওপারে ভালো থেকো, অফুরন্ত ভালোবাসা তোমায় জন্য।”

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img