২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

ম্যানচেষ্টার ডার্বি, ইপিএলে প্রথমবার মুখোমুখি গার্দিওলা-টেন হাগ

- Advertisement -

গেলো চার বছরে ইংলিশ লিগের কোন ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটি খেলতে নামবে কিন্তু তারা পুরোপুরিভাবে ফেভারিট নয়, এমন ঘটনা বিরল। অক্টোবরের দ্বিতীয় দিনের ম্যাচটাও হয়তো তার ব্যতিক্রম হবে না, ম্যাচটাও আবার সিটির ঘরের মাঠে। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায়।

কাতার স্পোর্টস গ্রুপ মালিকানা নেওয়ার পর থেকেই ম্যান সিটির সাম্রাজ্যের উত্থান শুরু হয়েছিল । সেই সাম্রাজ্যের একক অধিপতি বলা যায় পেপ গার্দিওলাকে, ২০১৬ সালে যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন থেকেই। পেপ আক্রমণাত্বক কোচ, গুরু ইয়োহান ক্রুইফের থেকে শেখা কৌশলটা ধীরে ধীরে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন গার্দিওলা। তিকিতাকার সাথে প্রেসিং, কখোনোবা লং বলে খেলে, সাথে ওয়ান টু ওয়ান; গোলের খেলায় গোল করার দর্শনই পেপের কোচিংয়ের মূল সুর। এই ধারাপাতেই অঙ্ক মিলিয়ে গেলো ৬ বছরে সিটিকে রেকর্ড ১০০ এবং ৯৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ জিতিয়েছেন চারবার।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ব্যাপারটা একটু আলাদা। সোনায় মোড়ানো অতীতের মুকুটে যখন ধুলো আর মরিচা, তখন যেন সেই ধুলা-ময়লা সাফ করে ইউনাইটেডকে চকচকে করার দায়িত্ব নিয়েছেন এরিক টেন হাগ। তার ডিরেক্ট ফুটবলে ফিরিয়ে এনেছেন, জার্মানদের সেই ঐতিহ্যবাহী আক্রমণের বিপরীতে কাউন্টার প্রেসিং বা মারদাঙ্গা প্রেসিং ফুটবল। ডাচ ওস্তাদ উইনাইটেড শিবিরে যোগ দেয়ার পর, রেড ডেভিলদের প্রত্যাবর্তন যেন গ্রীক পুরাণের ফিনিক্স পাখির মত,  ধংসযজ্ঞ থেকে পুনর্জন্ম।

নিয়মিত ব্যাক পাস, ধীর গতির ফুটবল থেকে টেন হাগের হ্যাভি মেটাল গতির ফুটবল, ট্রাঞ্জিশনে মানিয়ে নিতে সময় নেননি বেশি ইউনাইটেড প্লেয়াররা। বার বার ডিফেন্সিভ হাফে ভুল করে ধরাশায়ী হওয়া দলটাই চলতি প্রিমিয়ার লিগে শেষ চার ম্যাচে গোল হজম করেছে মোটে দুইটি, বাকি দুই খেলায় ক্লিনশিট। ইউনাইটেডের পারর্ফম্যান্সে নতুন দুই সাইনিং ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেজ আর ফরোয়ার্ড এন্থোনির ইম্প্যাক্টও স্পষ্ট।

টেন হাগের দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা মিডফিল্ড। গত এক দশকে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা মত খরচ করেও তারা কার্যকরী বা ম্যাচ ঘুড়িয়ে দিতে পারে এমন কোন কোন মিডফিল্ডার কিনতে পারেনি, উল্টো দিকে সিটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিকই হচ্ছে ওই মাঝমাঠ। বের্নার্দো সিলভা, ডি ব্রুইনা, গুন্দোগান আর রদ্রিদের নিয়ে গড়া ফোর ম্যান মিডফিল্ড যে কোন দলকেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

রোনালদো-ব্রুইনাদের লড়াই

 

আর সিটি যেহেতু পুরো টিম একসাথে আক্রমণ করে খেলে, সেজন্য তাদের এই কৌশলও হতে পারে বিপদের কারণ কেননা, গতিময় ফুটবলে কাউন্টার অ্যাটাকে ইউনাইটেড এখন পেশ পটু। সিটির দুই ফুলব্যাক যথেষ্ট দ্রুত দৌড়াতে পারলেও তাদের দুই সেন্টার ব্যাক অনেকটাই ধীর আর দুই ফুল ব্যাক উপরে উঠে সিটির ডিফেন্সে বেশ খানিকটা জায়গা ফাঁকা হয়ে যায়, বিভিন্ন সময়েই এই ঘটনা দেখা গেছে। আর ওই সুযোগটাই হয়তো কাজে লাগানোর কৌশল নিয়ে নামবেন টেন হাগ কারণ তিন ফরোয়ার্ড জেডন সানচো, মার্কাস রাশফোর্ড এবং এন্থোনির মূল শক্তিই তাদের গতি আর সেই গতি দিয়েই সিটি ডিফেন্সকে এলোমেলো কতে চাইবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাই সিটি ডার্বি যতোটা বাইশজন ফুটবলারের, তার চাইতেও হয়তো অনেক বেশি গার্দিওলা-টেন হাগের কৌশলের।

প্রিমিয়ার লিগ নামকরণ হওয়ার পর রবিবারের ম্যানচেস্টার ডার্বি একান্নতম, আগের পঞ্চাশে ইউনাইটেড জিতেছে চব্বিশ ম্যাচ, সিটি সতেরো। শেষ দুই ডার্বিতেও জয়ী দল গার্দিওলা সিটি। সবশেষ ২০০৮ – ১০ সালের মধ্যে টানা চার ম্যানচেস্টার ডার্বি জিতেছিলো ইউনাইটেড।  রোববার ইতিহাদে জিতলে টেবিলের চারে ওঠার সুযোগ থাকবে রেড ডেভিলদের সামনে। অন্য দিকে, দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখে আর্সেনালের সাথে ব্যবধান কমানোর জন্য ম্যানচেসটার সিটিও হয়তো সর্ব্বোচ্চ চেষ্টাই করবে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img